বৌ-ঠাকুরাণীর হাট S86:
আমিই শুধু রৈন্থ বাকি। যা ছিল তা গেল চলে, রইল যা তা, কেবল ফাকি ।
আমার ব’লে ছিল যারা,
আর ত তারা দেয় না সাড়া, কোথায় তারা, কোথায় তারা ? কেঁদে কেঁদে কাবে ডাকি ।
বল দেখি মা, শুধাই তোরে, “আমার” কিছু রাখলি নেরে ? আমি কেবল আমায নিযে কোন প্রাণেতে বেঁচে থাকি।
কে জানে কী ভাবিয়া বৃদ্ধ এই গান গাহিতে ছিলেন। বুঝি তাহার মনে হইতেছিল, গান গাহিতেছি, কিন্তু যাহাদের গান শুনাইতাম, তাহারা যে নাই। গান আপনি আসে, কিন্তু গান গাহিয়া যে আর স্থখ নাই। এখনো আনন্দ ভুলি নাই, কিন্তু যখনি আনন্দ জন্মিত, তখনি যাহাদের আলিঙ্গন করিতে সাধ যাইত, তাহারা কোথায় ? যে দিন প্রভাতে রায়গড়ে ঐ তাল গাছটার উপবে মেঘ করিত, মনটা আনন্দে নাচিয়া উঠিত, সেই দিনই আমি যাহাদের দেখিতে যশোরে যাত্রা করিতাম, তাহাদের কি আর দেখিতে পাইব না ? এখনো এক একবার মনটা তেমনি আনন্দে নাচিয়া উঠে কিন্তু হা—এইসব বুঝি ভাবিয়া আজ বিকাল বেলায় অস্তমান স্থধ্যের দিকে চাহিয়া বুদ্ধ বসন্তরায়ের মুখে আপন আপনি গান উঠিয়াছে—“আমিই শুধু রৈন্থ বাকি।”
এমন সময়ে খী সাহেব আসিয়া এক মস্ত সেলাম করিল। খ সাহেবকে দেখিয়া বসন্তরায় উৎফুল্ল হইয়া কহিলেন—“খা সাহেব, এসো এসো !” অধিকতর নিকটে গিয়া ব্যস্তসমস্ত হইয়া কহিলেন, “সাহেব, তোমার মুখ অমন মলিন দেখিতেছি কেন ? মেজাজ ভাল আছে ত?”
খ লাহেব—“মেজাজের কথা আর জিজ্ঞাসা করিবেন না, মহারাজ।
Se
পাতা:বৌ-ঠাকুরাণীর হাট-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৪৫
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
