একবার উদয়াদিত্যের কথা ভাবিল। বলিয়া উঠিল—“মামা, কি হইয়াছে। বল!”
রমাপতি তাহার কথার কোন উত্তর না দিয়া রামচন্দ্রকে কহিলেন, “বাবা, অনর্থক কালবিলম্ব হইতেছে। এই বেলা গােপনে পালাইবার উপায় দেখ।”
হঠাৎ বিভার মনে একটা দারুণ অশুভ আশঙ্কা জাগিয়া উঠিল। গমনােদ্যত মাতুলের পথরােধ করিয়া কহিল, “ওগো তােমার দুটি পায়ে পড়ি, কি হইয়াছে বলিয়া যাও!”
রমাপতি সভয়ে চারিদিকে চাহিয়া কহিলেন, “গােল করিসনে বিভা, চুপ কর, আমি সমস্তই বলিতেছি!”
যখন রমাপতি একে একে সমস্তটা বলিলেন, তখন বিভা একেবারে চীৎকার করিয়া উঠিবার উপক্রম করিল। রমাপতি তাড়াতাড়ি তাহার মুখ চাপিয়া ধরিলেন—কহিলেন—“চুপ, চুপ, সর্ব্বনাশ করিস্নে!” বিভা রুদ্ধশ্বাসে অর্দ্ধরুদ্ধস্বরে সেইখানে বসিয়া পড়িল।
রামচন্দ্র রায় সকাতরে কহিলেন “এখন আমি কি উপায় করিব? পালাইবার কি পথ আছে, আমিত কিছুই জানি না!”
রমাপতি কহিলেন—“আজ রাত্রে প্রহরীরা চারিদিকে সতর্ক আছে। আমি একবার চারিদিকে দেখিয়া আসি যদি কোথাও কোন উপায় থাকে।”
এই বলিয়া তিনি প্রস্থানের উপক্রম করিলেন। বিভা তাঁহাকে ধরিয়া কহিল, “মামা, তুমি কোথায় যাও! তুমি যাইও না, তুমি আমাদের কাছে থাক।”
রমাপতি কহিলেন, “বিভা তুই পাগল হইয়াছিস্! আমি কাছে থাকিলে কোন উপকার দেখিবে না। ততক্ষণ আমি একবার চারিদিকের অবস্থা দেখিয়া আসি।”