করছে। ঈশ্বরকে যে জানতে পারে ও জানে, তার বিবরণ যখন আমরা একেবারেই বাদ দিই, তখন ঈশ্বরকে অজ্ঞেয় বলা নিতান্ত পুনরুক্তি মাত্র । আহারকারীর অনুপস্থিতিতে খাদ্য আহারযোগ্য নয় বলার মতোই এই উক্তি। শুকনো নীতিবাদীরা আমাদের হৃদয়ের বাঞ্ছিত বিষয় থেকে আমাদের সরিয়ে নেবার জন্য এই একই কৌশল অবলম্বন করেন। যে জগতে নৈতিক ভাবগুলি সৌন্দর্যে স্বাভাবিক স্থান পাবে, আমাদের জন্য সে জগৎ সৃজনের পরিবর্তে তারা আমরা যে অসম্পূর্ণ জগৎ নিজেরা গড়ে তুলেছি, তা ভাঙতে শুরু করেন। তারা মানবিক ব্যক্তিত্বের পরিবর্তে নৈতিক বচন উপস্থিত করেন এবং বস্তুনিচয়ের ধ্বংসের দৃশ্য
আমাদের দেখান এবং প্রমাণ করতে চান যে তাদের অবয়বের অন্তরালে বিকট প্রতারণা রয়েছে। কিন্তু যখন আপনি সত্যকে তার অবয়ব-চু্যত করেন, তখন সে বাস্তবতার শ্রেষ্ঠ অংশ হারায় । কারণ অবয়ব ব্যক্তিগত সম্পর্কের অন্তর্গত ; এ আমারি জন্য । এই বহিঃ-অবয়ব উপরিতলের বলে বোধ হয়, কিন্তু তা অন্তগুঢ় আত্মবি বাণীবাহক । আপনাদের কবি এর সম্পর্কে বলেছেন—
আমার পর্যবেক্ষণের সূচনার প্রথম ধাপেই
আমি খুব তৃপ্ত হয়েছি, কেবলমাত্র তথ্য, চেতনা— তার নানা রূপ,— গতির শক্তি, তুচ্ছ কীট বা পশু-ইন্দ্রিয়-নিচয়-দৃষ্টিশক্তি-ভালোবাসা ; আমি বলি এই প্রথম ধাপ আমাকে ভীত, বিস্মিত
ও এত মুগ্ধ করেছে যে, আমি এগোই নি, আরো বেশি এগোতে চাই না, - কেবল থামতে চাই, সারা বেলা ঘুরে বেড়াতে চাই, আর গান গেয়ে জীবনোল্লাস প্রকাশ করতে চাই ।
8Vう
পাতা:ব্যক্তিত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
