ত্রুটিহীন ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন— ঈশোপনিষৎ এই শিক্ষাই দিয়েছেন । তাই ঈশোপনিষদের সূচনা হয়েছে এই শ্লোকে—
ঈশ৷ বাস্যমিদং সৰ্বং যৎ কিঞ্চ জগত্যাং জগৎ । তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথ মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ধনম ৷ অর্থাৎ আমাদের জানতে হবে এই জগতের নানা গতি নিতান্ত অন্ধগতি নয় ; তারা এক মহান পুরুষের ইচ্ছার সঙ্গে সম্পর্কিত। সত্যের নিছক জ্ঞান ত্রুটিপূর্ণ, কেননা তা ব্যক্তিগত নয়। কিন্তু আনন্দোপভোগ ব্যক্তিগত, এবং আমার উপভোগের ঈশ্বর চলছেন ; তিনি ক্রিয়াশীল ; তিনি নিজেকে দান করছেন । এই দানক্রিয়ায় অসীম সীমার রূপ ধারণ করেন, এবং সেজন্য এমনভাবে বাস্তব হয়ে ওঠেন যা’তে তার মধ্যে অামি আমার আনন্দকে পাই ।
[আমাদের যুক্তির আাধারে প্রতিভাত জগৎ অদৃশ্য হয়ে যায় ও আমরা তাকে বলি মায়া । এ হল নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী । কিন্তু আমাদের উপভোগ ইতিবাচক । বিশ্লেষণ ক’রে দেখলে একটি ফুল কিছুই না, কিন্তু যখন আমরা তা উপভোগ করি তখন ফুল সত্যই ফুল । এই আনন্দ সত্য, কেনন। তা ব্যক্তিগত । আর সম্পূর্ণ ক্রটিহীন সত্যকে কেবল আমাদের ব্যক্তিত্বের দ্বারাইট সম্পূর্ণরূপে পাই আর সে কারণেই উপনিষৎ বলেছেন—
যতোবাচোনিবর্তন্তে অপ্রাপ্য মনসা সহ । আনন্দং ব্রহ্মণোবিদ্বান ন বিভেতি কুতশ্চন । অসীমের নিস্ক্রিয় ও সক্রিয় দিক দুটি নিয়ে ঈশোপনিষৎ আলোচনা করে একটি শ্লোকে বলেছেন—
স পর্যগাছুক্রমকায়মত্রণমস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্। কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভর্যাথাতথ্যতোহর্থান ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ
সমাভ্য: |
○ *
পাতা:ব্যক্তিত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
