মানবশিশুরা যে অন্যায় যন্ত্রণা ভোগ করে, তার জ্ঞান আমি এই পীড়ন থেকেই পেয়েছি ।
এর কারণ হচ্ছে এই— শিশুরা কী ভাবে জ্ঞানের রাজ্যে বেড়ে উঠবে, সে বিষয়ে মানুষের ইচ্ছা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যায়। আমাদের কাজকর্ম কী ভাবে চালাবো, তা আমাদের নিজেদের ব্যাপার, আর সেই কারণে আপিসে আমাদের বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবস্থা অবলম্বনের স্বাধীনতা আমাদের অাছে । কিন্তু এই ধরণের আপিসী বন্দোবস্ত ঈশ্বরের সৃষ্টিতে খাপ খায় না। আর শিশুরা হচ্ছে ঈশ্বরের নিজস্ব স্থষ্টি ।
এই জগতে আমরা এসেছি একে গ্রহণ করব বলে । নিছক এই জগৎকে জানতে আমরা আসি নি। জ্ঞানের দ্বারা আমরা শক্তিমান হতে পারি, কিন্তু সহানুভূতির দ্বারা আমরা পূর্ণতাকে পাই । উচ্চতম শিক্ষা আমাদের কেবল সংবাদ দেয় না, সকল অস্তিত্বের সঙ্গে আমাদের জীবনের ঐক্য রচনা করে। কিন্তু আমরা দেখি এই সহানুভূতির শিক্ষা বিদ্যালয়গুলিতে কেবল রীতিমাফিক অগ্রাহ করাই হয় না, সেই সঙ্গে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হয়। আমাদের নিতান্ত শৈশব থেকে অভ্যাস গড়ে ওঠে, এবং জ্ঞান এমনভাবে দেওয়া হয় যাতে আমাদের জীবন প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যায় ; এবং আমাদের জীবনসূচনা থেকে আমাদের মন ও জগৎকে পরস্পরের বিরুদ্ধে স্থাপনা করা হয়। এই ভাবে যে মহত্তম শিক্ষার জন্য আমরা প্রস্তুত হয়ে আসি, তাকে অবহেলা করা হয় । [ੋੜ একঝুড়ি সংবাদ সঞ্চয়ের জন্য আমাদের জগৎকে হারাতে আমাদের বাধ্য করা হয় । ! আমরা শিশুকে ভূগোল শেখাবার জন্য তার জগৎকে সরিয়ে দিই, ও ব্যাকরণ শেখাবার জন্য তার ভাষা হরণ করি শিশুর তৃষ্ণ
©☾
পাতা:ব্যক্তিত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
