পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
ব্যঙ্গকৌতুক

দিব্যি আহার ক’র্‌তে ব’সেচো! তােমার এ কী রকমের সাজ! (উচ্চহাস্য) ব্যাপারখানা কী! নরমুণ্ড, খাঁড়া, বাতি, জবার মালা? তােমার বলিদান হবে না কি?

 অন্নদা। হ’য়ে গেচে।

 আশু। হ’য়ে গেচে কী রকম?

 অন্নদা। সে সকল ব্যাখ্যা পরে ক’র্‌বো। তােমার খবরটা আগে বলো।

 আশু। তুমি বিবাহের জন্যে যে কন্যাটিকে দেখবে ব’লে স্থির ক’রেছিলে, তাঁরা হঠাৎ উনপঞ্চাশ নম্বর থেকে বাইশ নম্বরে উঠে গেচেন। আমি কন্যার বিধবা মাকে মাতাজি মনে ক’রে বরাবর এমন নির্ব্বোধের মতো কথাবার্ত্তা ক’য়ে গেচি যে, তাঁরা ঠিক ক’রে নিয়েচেন —আমি মেয়েটিকে বিবাহ ক’র্‌তে সম্মত হ’য়েচি। এখন তুমি না গেলে তো আর উদ্ধার নেই।

 অন্নদা। মেয়েটি দেখতে কেমন?

 আশু। দেবকন্যার মতো।

 অন্নদা। তা হােক্, বহুবিবাহ আমার মতবিরুদ্ধ।

 আশু। বলাে কী? সেদিন এতাে তর্ক ক’র্‌লে—

 অন্নদা। সেদিনকার চেয়ে ঢের ভালো যুক্তি পাওয়া গেচে—

 আশু। একেবারে অখণ্ডনীয়?

 অন্নদা। অখণ্ডনীয়।

 আশু। যুক্তিটা কীরকম দেখা যাক্!

 অন্নদা। তবে একটু ব’সাে। (প্রস্থান ও মাতাজিকে লইয়া প্রবেশ) ইনি আমার স্ত্রী শ্রীমতী মহীমােহিনী দেবী।

 আশু। অ্যাঁ! ইনি তােমার—আপনি আমাদের অন্নদার—কী আশ্চর্য্য তা হ’লে তাে হ’তে পারে না!