পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ব্যঙ্গকৌতুক

এই জন্য হাস্য প্রগল্‌ভতা আমি সযত্নে দূরে পরিহার করিয়াছি। ভবিষ্যতে সুশ্রুত ও চরক সংহিতা নাট্যাকারে রচনা করিবার অভিলাষ আছে এবং উপন্যাসের ন্যায় লঘু সাহিত্যকে কতোদূর পর্য্যন্ত সারবান করিয়া তোলা যাইতে পারে, পাঠকদিগকে তাহারো কিঞ্চিৎ নমুনা দিবার সঙ্কল্প করিয়াছি।

ভবদীয় একান্ত অনুগত শ্রীজনহিতৈষী সাহিত্য প্রচারক।

 ১২৯৮।

মীমাংসা

 আমাদের বাড়ির পাশেই নবীন ঘোষের বাড়ি। একেবারে সংলগ্ন বলিলেই হয়।

 আমি কখনো আমাদের বাড়ির ছাদে উঠি না, জানালায়ও দাঁড়াই না। আপন মনে গৃহকার্য্য করিয়া যাই।

 নবীন ঘোষের বড় ছেলে মুকুন্দ ঘোষকে কখনো-চক্ষে দেখি নাই।

 কিন্তু, মুকুন্দ ঘোষ কেন বাঁশি বাজায়! সকালে বাজায়, মধ্যাহ্নে বাজায়, সন্ধ্যাবেলায় বাজায়। আমার ঘর হইতে স্পষ্ট শোনা যায়।

 আমি কবি নই, মাসিক পত্রিকার সম্পাদক নই, মনের ভাব সম্পূর্ণ ব্যক্ত করিয়া উঠিতে পারি না। কেবল সকালে কাঁদি, মধ্যাহ্নে কাঁদি, সন্ধ্যাবেলায় কাঁদি এবং ইচ্ছা করে ঘর ছাড়িয়া বাহির হইয়া যাই।

 বুঝিতে পারি রাধিকা কেন তাঁহার সখীকে সম্বোধন করিয়া কাতর স্বরে বলিয়াছিলেন “বারণ কর্‌লো সই, আর য়েন শ্যামের বাঁশি বাজে না বাজে না।”