পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ব্যঙ্গকৌতুক

রসিকতার ফলাফল

 আর কিছুই নয়, মাসিকপত্রে একটা ভারি মজার প্রবন্ধ লিখিয়াছিলাম। পড়িয়া অন্তরঙ্গ বন্ধুরা তে হাসিয়াছিলই,আবার শত্রুপক্ষও খুব হাসিতেছে।

 অষ্ট্ৰপাইকা, সাপ্‌টিবারি ও টাঙ্গাইল হইতে তিনজন পাঠক জিজ্ঞাসা করিয়া পঠাইয়াছেন প্রবন্ধটির অর্থ কী? তাঁহাদের মধ্যেএকজন ভদ্রতা করিয়া অনুমান করিয়াছেন ইহাতে ছাপাখানার গলদ্ আছে; আর একজন অনাবশ্যক সহৃদয়তাবশত লেখকের মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করিয়াছেন; তৃতীয় ব্যক্তি অনুমান এবং আশঙ্কার অতীত অবস্থায় উত্তীর্ণ; বস্তুত আমিষ্ট তাঁহার জন্য উৎকণ্ঠিত।

 শ্রীযুক্ত পাচকড়ি পাল হবিগঞ্জ হইতে লিখিতেছেনঃ—“গোবিন্দবাবুর এ প্রবন্ধের উদেশ্ব কী? ইহাতে কি ফরাসডাঙ্গার তাঁতিদের দুঃখ ঘুচিবে? দেশে যে এতো লোককে ক্ষ্যাপা কুকুর কামড়াইতেছে এ প্রবন্ধে কি তাহার কোনো প্রতিকার কল্পিত হইয়াছে?”

 অজ্ঞানতিমিরনিবারণী পত্রিকায় উক্ত প্রবন্ধের সমালোচনায় লিখিত হইয়াছেঃ—“গোবিন্দবাবু যদি সত্যই মনে করেন দেশে ধানের ক্ষেতে পাটের আবাদ হইয়া চাষাদের অবস্থার উন্নতি হইতেছে তবে তাঁহার প্রবন্ধের সঙ্গে আমাদের মতের মিল নাই। আর যদি তিনি বলিতে চান পাট ছাড়িয়া ধানের চাষই শ্রেয় তবে সে কথাও সম্পূর্ণ সত্য নহে। কিন্তু কোনটা যে তাঁহার মত, প্রবন্ধ হইতে তাহ নির্ণয় করা দুরূহ।”