পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
ব্যঙ্গকৌতুক

ক’র্‌লেম তখন সর্ব্বশেযে ঐ খুঁৎটুকু আর রাখ্‌বো না। কিন্তু আমার কাছে আর একটিমাত্র টাকা বাকি আছে। তা’র মধ্যে বারো আনা আমি গাড়ি ভাড়ার জন্যে রেখে দিতে চাই। তােমার কাছে খুচ্‌রো যদি কিছু থাকে তা হ’লে ভাঙিয়ে—

 খুচ্‌রাে নেই? (পকেট উল্টাইয়া শেষ টাকাটি দিয়া) তবে এই লও বাপু, তােমাদের বাড়ি থেকে বেরােলুম একেবারে “গজভুক্ত কপিত্থবৎ!”

 কিন্তু এই যে টাকাগুলি দিলুম, উদয়ের কাছ থেকে ফিরে আদায় কর্‌বার কী উপায় করা যায়? একটা দামি জিনিষ যদি কিছু পাওয়া যায় তো আটক ক’রে রাখি! দামী জিনিষের মধ্যে তাে দেখ্‌চি ঐ চন্দ্রকান্ত! কিন্তু যে রকম দেখ্‌লুম ওঁকে সংগ্রহ করা আমার কর্ম্ম নয়, আমাকে উনি ট্যাঁকে গুঁজে নিতে পারেন।

 (কোণে একটা দেরাজ সবলে খুলিয়া) বাঃ, এই তাে ঠিক হ’য়েছে! চেনটিও দিব্যি! তা’ হ’লে ঘড়িসুদ্ধ এইটি দখল করা যাক!

 কী হে চন্দ্র, এতো ব্যস্ত কেন?

 পুলিস? পুলিস আস্‌চে?

 আমাকে পালাতে হবে? কেন, কী দুষ্কর্ম্ম ক’রেচি? কেবল এক ভদ্রলােকের নিমন্ত্রণ রক্ষা ক’র্‌তে এসেচি, তা’র যা শাস্তি যথেষ্ট হ’য়েচে।

 তাই তাে সত্যিই দেখ্‌চি! চন্দ্র কোথায় গেল? হরিবাবুর সেই লােকটিকেও যে দেখ্‌চিনে! সবাই পালিয়েচে।

 দেখাে বাপু গায়ে হাত দিয়ো না! ভালো হবে না! আমি ভদ্রলােক। চোর নই জালিয়াৎ নই।

 উঃ করো কী! লাগে যে! বাবা আজ সমস্ত দিন কেবল মুড়ি খেয়ে পথ চেয়ে আছি, আজ তােমাদের এ-সব ঠাট্টা আমার ভালাে লাগ্‌চে না।

 পেয়াদা বাবা, বরঞ্চ কিছু জলপানী নাও! (পকেটে হাত দিয়ে) হায় হায় একটি পয়সা নেই! দারােগা সাহেব, যদি চোর ধ’র্‌তে চাও,