ক’রে দেবো তা জানিস্! সবাই আমাকে ভক্তি ক’র্চে আর তুই বেটা এতাে বড়ো খৃষ্টান্ হ’য়েচিস্ যে, আমাকে দেখে প্রণাম করিস্ নে! তাের পরকালের ভয় নেই? বেরাে আমার বাড়ি থেকে!
ছি বাবা উমেশ, তােমার এতো বয়স হ’লো, তবু কার সঙ্গে কী রকম ব্যবহার ক’র্তে হয় শিখ্লে না? যে ভগীরথ মর্ত্ত্যে গঙ্গা এনেছিলেন তাঁর গল্প মহাভারতে প’ড়েচো তো? ভুল ক’র্চো—ঐরাবত নয়, সে ভগীরথ। আমাকে সেই ভগীরথ ব’লে জেনো! বুঝেচো? মনে থাক্বে তো? ভগীরথ,—ঐরাবত নয়। সেই জায়গাটা মাষ্টারের কাছে প’ড়ে নিয়ো! এসো বাবা, তোমার মাথায় পায়ের ধূলাে দিয়ে দিই।
কই! ভাত কই! আমি আর সবুর ক’র্তে পার্চিনে—দেশদেশান্তর থেকে সব লােক আস্চে! কী গাে গিন্নি, এতাে রাগ কিসের? হ’য়েচে কী? খিড়কির পুকুরে লােকজনের ভিড় হ’য়েচে? নাওয়া, কাপড় কাচা, বাসন মাজা, জলতােলা সমস্ত বন্ধ হ’য়েচে? কী ক’র্বাে বলো! আমি স্বয়ং ভগীরথ হ’য়ে গঙ্গা থেকে তাে কাউকে বঞ্চিত ক’র্তে পারিনে। তা হ’লে আমি এতো তপিস্যে ক’রে এতাে কষ্ট করে গঙ্গা আন্লুম কেন? তােমাদের ময়লা কাপড় কাচবার জন্যে—বটে! যখন ব্রাহ্মণের সঙ্গে মকদ্দমা ক’র্ছিলুম তখন তােমরা সেই আশায় ব’সেছিলে, আসল কথাটা কেবল আমি জানতুম আর মা গঙ্গাই জান্তেন! —কী! এতাে বড়ো আস্পর্দ্ধা—তুই বিশ্বাস করিস্নে! জানিস্, তােকে বিয়ে ক’রে তাের চোদ্দপুরুষকে আমি উদ্ধার ক’রেচি! বাপের বাড়ি যাবে! যাও না! মরবার সময় আমার এই গঙ্গায় আস্তে দেবো না! সেটা মনে রেখো? ভাত আর আছে তাে? নেই? আমি যে তােমাকে বেশি ক’রে রাঁধতে ব’লে দিয়েছিলুম! আমার প্রসাদ নিয়ে যাবে ব’লে যে দেশ বিদেশ থেকে লােক এসেচে! যা রেঁধেচো, এর একটা একটা ভাত খুঁটে দিলেও যে কুলবে না! রান্নাঘরে