পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
ব্যঙ্গকৌতুক

 (ঘেঁটুকে ইন্দ্রের বামপার্শ্বে শচীর নির্দ্দিষ্ট স্থানে বসিতে দেখিয়া দূরে এক কোণে শচীদেবী কর্ত্তৃক সামান্য এক আসন গ্রহণ।)

 ঘেঁটু। (শচীর অনতিদূরে গমন করিয়া সহাস্যে) বৌঠাক্‌রুণ, আমার দাদাকে কী মন্তর প’ড়ে দিয়েচো বলো দেখি! একেবারে শ্রীচরণের গোলাম ক’রে রেখেচো! তুমি উঠ্‌লে ওঠে, তুমি ব’স্‌লে বসে! বলি, একটা কথাই কও! (গান) “কথা কইতে দোষ কি আছে বিধুমুখী!”

 ইন্দ্র। দেব ঘেঁটো, কিঞ্চিৎ অবসর দিতে অনুমতি হৌক্‌! দেবীর নিকট কিছু নিবেদন আছে!

 ঘেঁটু। ঈস্ দেখো! দেখো! একটু কাছে এসে ব’সেচি তোমার যে আর গায়ে সইলো না—এতোটা বাড়াবাড়ি কিছু নয়—কথায় বলে অতিভক্তি চোরের লক্ষণ! কাজ নেই ভাই আবার শাপ দেবে। তোমরা দু-জনে বোসো, আমি যাই। (বলপূর্ব্বক ইন্দ্রকে শচীর আসনে বসাইবার চেষ্টা)

 ইন্দ্র। (ঘেঁটুকে দূরে অপসারণ করিয়া) দেব, তুমি আত্মবিস্মৃত হইতেছ!

ওলাবিবির প্রবেশ

 ওলা। (শচীর প্রতি) তাই বলি যায় কোথায়! অমনি বুঝি সোয়মির কাছে নাগাতে এসেচো! তা নাগাও না! তোমার সোয়ামিকে আমি ডরাইনে!

 শচী। (আসন হইতে উঠিয়া ইন্দ্রের প্রতি) দেবরাজ, আমি জয়ন্তকে সঙ্গে লইয়া বিষ্ণুলোকে কিছুকাল লক্ষ্মীদেবীর আলয়ে বাস করিবার সংকল্প করিয়াছি। বহুকাল দেবীদর্শন ঘটে নাই।

 ইন্দ্র। আর্য্যে, আমিও দেবীর অনুসরণ করিতেছি। বহুকাল পূজার অনবসরক্রমে চক্রপাণির নিকট অপরাধী হইয়া আছি।

(উভয়ের প্রস্থান)