পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বশীকরণ
৭৫

 আশু। তুমি মনে কর, আমি সবই অন্ধভাবে বিশ্বাস করি―তা নয়। এ সমস্ত বিশ্বাসের যােগ্য কি না, তাই আমি পরীক্ষা ক’রে দেখ্‌তে চাই! অবিশ্বাসকেও তাে প্রমাণের উপর স্থাপন ক’র্‌তে হবে।

 অন্নদা। ব’সে ব’সে তাই করো! মরীচিকা স্থাপনের জন্যে পাথরের ভিত্তি গাঁথো। আমি এখন চ’ল্লেম।

 আশু। কোথায় যাচ্চো?

 অন্নদা। শবসাধনায় নয়।

 আশু। তা তাে জানি।

 অন্নদা। একটি সজীবের সন্ধান পেয়েছি।

 আশু। তবে যাও! শুভকার্য্যে বাধা দেবাে না!

দ্বিতীয় অঙ্ক

বাড়িওয়ালা ও তাহার স্ত্রী

 স্ত্রী। মাতাজি যদি হবে, তবে অমন চেহারা কেন?

 বাড়িওয়ালা। দেখ্‌তে শুন্‌তে তাড়কা-রাক্ষসীর মতাে না হ’লেই বুঝি আর মাতাজি হয় না!

 স্ত্রী। হবে না কেন! কিন্তু তাহ’লে কি এই সমর্থবয়সে স্বামীর ঘরে না থেকে তােমার মতো বােকা ভােলাবার জন্যে মাতাজি-গিরি ক’র্‌তে বেরােতো? তাহলে কি পিতাজি তােমার মাতাজিকে ছাড়্‌তো? আর এতাে টাকাই বা পেলে কোথায়?

 বাড়িওয়ালা। ওগাে, যারা যােগবিদ্যা জানে, তাদের যদি টাকা না হবে,—চেহারা না হবে, তবে কি তােমার হবে? রােসাে না,—ওঁর কাছে মন্তরটন্তরগুলো শিখে নেওয়া যাক্ না।

 স্ত্রী। বুড়ােবয়সে মন্তর শিখে হবে কী শুনি? কা’কে বশ ক’র্‌বে?

 বাড়িওয়ালা। যাঁকে কিছুতেই বশ মানাতে পার্‌লেম না!