পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
ব্যঙ্গকৌতুক

 আশু। তবু একটা প্রিন্সিপল্ আছে তাে―বহুবিবাহকে বহুবিবাহ ব’ল্‌তেই হবে।

 অন্নদা। আমার নামমাত্র স্ত্রী যেখানে আছে, প্রিন্সিপ্‌লও সেইখানে আছে। সে স্ত্রীও আস্‌চে না, প্রিন্সিপ্‌লও রইলো—অতএব এখন আমি ডঙ্কা মেরে বহুবিবাহ ক’র্‌বো, প্রিন্সিপ্‌ল্ জুজুকে ডরাবো না!

রাধাচরণের প্রবেশ

 রাধা। আশুবাবু!

 আশু। কী হে রাধে!

 রাধা। সেদিন আপনি আমার সঙ্গে মন্ত্র নিয়ে তর্ক ক’র্‌লেন—এক একটা শব্দের যে একএক প্রকার বিশেষ ক্ষমতা আছে, আমার বােধ হ’লো আপনি যেন তা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন না।

 অন্নদা। বলো কী রাধে—তা হলে আর অবিশ্বাস কর্‌বার ক্ষমতা এখনাে সম্পূর্ণ লােপ হয় নি— এখনাে দুটো একটা জায়গায় ঠেক্‌চে! শব্দের মধ্যে শক্তি আছে, এ কথা বাঙালীর ছেলে বিশ্বাস করো না।

 রাধা। বলুন তাে অন্নদাবাবু! তা হ’লে মারণ, উচাটন, বশীকরণ, এগুলাে কি বেবাক্‌ গাঁজাখুরি!

 অন্নদা। তাও কি কখনো হয়? সংসারে কি এতাে গাঁজার চাষ হ’তে পারে!

 রাধা। পশ্চিম থেকে একজন যােগসিদ্ধ মাতাজি এসেচেন। শুনেচি তিনি মন্ত্রের বল একেবারে প্রত্যক্ষ দেখিয়ে দিতে পারেন। দেখ্‌তে গিয়েছিলেম, কিন্তু সকলকে তিনি দেখা দেন না; ব’লেচেন, যােগ্য লােক পেলে তা’কে তিনি তাঁর সমস্ত বিদ্যে দেখিয়ে দেবেন। আশুবাবু, আপনি চেষ্টা ক’র্‌লে নিশ্চয় বিফল হবেন না।

 আশু। তিনি থাকেন কোথায়?