পাতা:ব্যবসায়ে বাঙালী.djvu/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ে বাঙালী তাহার বড় একটা খাজনা আদায় হয় না। কারণ তাহাদের ধার ভার" নাই, অতএব কেহ কথা গ্রাহ করে না। ইহাদের আদালতে যাইবারও ক্ষমতা নাই। এই মধ্যবিত্ত-শ্রেণী সমাজে প্রতিপত্তিহীন । ইহাদের অবস্থা এমনই শোচনীয় যে, বাড়ী-ঘর মেরামতের অর্থ পৰ্য্যন্ত নাই । বর্ষায় জল পড়িয়া ঘরের ভিতর ভাসিয়া যায়, সমস্ত রাত্রি বসিয়া বসিয়া কাটে। ঘরে চা’ল নাই, উপবাসে দিন যায়, তবু কাহারও কাছে মুখ ফুটিয়া সেকথা প্রকাশ করিবার উপায় নাই। তাতে নিজের হীনতা প্রতিপন্ন হয় ও প্রাণে আঘাত লাগে। দিন চলে ইহাদের অতিকষ্টে,—হয় তো বাড়ীর সামান্ত কলা, কচু, নারিকেল,স্বপারি হাটে-বাজারে বিক্রয় করিয়া তন্দ্বারা দু’চার আনা সংগ্ৰহ হইলে তাহাতেই কোন প্রকারে ফেনভাত জোটে। আবার যে-সমস্ত লোকের পূর্বপুরুষ-অর্জিত একটু আভিজাত্য আছে, তাহারা নিজের হাটে-বাজারে গিয়া ঐ সমস্ত মাল বিক্রয় করিতে লজ্জিত হন । কাজেই কোন লোকের সাহায্যে উহা বিক্রয় করিতে হয়। কিন্তু সে যদি উহা হইতে কিছু কমিশন লয়, তাহাতে আপত্তি করার উপায় নাই । মধ্যবিত্তদের পেশা এই শ্রেণীর কেহ কেহ মহেশ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়ের গোটfকতক /৫ পয়সা ড্রামের ঔষধ ও • আনা মূল্যের একখানি চিকিৎসাতত্ব খরিদ করিয়া ডাক্তারী করেন । যাহারা এই সব ডাক্তারের ঔষধ খায়, তাহাঁদের অবস্থা যে কিরূপ তাহ সহজেই অনুমেয় । মাত্র দু’এক আনা এ সব চিকিৎসার দক্ষিণা । তাও যাদের জোটে না, তাহারা হরিবোলা হয়, মাটিপড়া খায়, ঝাড়ফুক্‌ করায়। এসব চিকিৎসায় কাহাদের রোগ সারে—বাচিয়া থাকিয়া যাহাঁদের দুঃখভোগের মেয়াদ না ফুরায় একমাত্র তাহাদেরই।