পাতা:ব্যবসায়ে বাঙালী.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ে বাঙালী 8 ২৫৩০ টাকায় বিক্রয় হইয়াছিল, সে বৎসর কলিকাতায় করগেট টিন, শালের খুটা, লোহার সিন্ধুক, সাইকেল প্রভৃতি জিনিষ যে কি অসম্ভব পরিমাণে বিক্রয় হইয়াছিল, তাহ বলিবার নয়। সে বৎসর ফৌজদারী আদালতে মামলা-মোকদ্দমার সংখ্যাও অসম্ভব রকমে বৃদ্ধি পাইয়াছিল। চাষীর অর্থ নানা ভাবে দেশময় ছড়াইয়া পড়ে, তাহাতে সাধারণ লোকের অর্থ-কষ্ট চরম অবস্থায় উঠে না, অন্ততঃ অনাহারে মৃত্যু ঘটে না। অর্থাভাল বাংলা কৃষি-প্রধান দেশ। কুষিলন্ধ জিনিষের যদি উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যাইত, তাহা হইলে হয়তো সাধারণ লোকে অন্নবস্ত্রের অভাবে আজ দুর্দশার এতটা চরম সীমায় উপস্থিত হইত না । কয়েক বৎসর পূর্বে একবার অনাবৃষ্টির ফলে ফসল অজন্মা হেতু চাউলের দর প্রতি সের তিন আনা পৰ্য্যস্ত বিক্রয় হইয়াছিল। কিন্তু পাট বা কৃষিলন্ধ অন্যান্য জিনিষের দর বেশী থাকায় সাধারণ লোক আলোচ্য ১৯৩৬ সালের মত এত বিপন্ন হইয়া পড়ে নাই। গত বৎসর ধান্তের ফসল অজন্মা হেতু এ বৎসর রেঙ্গুন হইতে বাংলাদেশে ৯৩ লক্ষ বস্ত চাউল আমদানী হইয়াছে। বাজারে চাউল পাচ পয়সা সের খুচরা বিক্রয় হইতেছে, তাহাতেও সাধারণ লোক অনাহারে-অৰ্দ্ধাহারে কাটাইতেছে। ইহা প্রমাণ করে, বাংলাদেশে কি শোচনীয় অর্থাভাব ঘটিয়াছে ! কুষিলন্ধ জিনিষের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায়, কৃষক-শ্রেণীর ত সৰ্ব্বনাশ হইয়াছেই, সঙ্গে সঙ্গে বাংলার জমিদার, তালুকদার, গাতীদার প্রভৃতির সম্পত্তিও প্রতি কিস্তিতে নীলামে বিক্রয় হইয়া যাইতেছে। ব্যবসার মধ্যেও ঘোর প্রতিযোগিতার স্বষ্টি হইয়াছে। একমাত্র জন-কয়েক মুষ্টিমেয় ধনী লোকের কথা ছাড়িয়া দিলে, বাংলার সাধারণ লোক সকলের মধ্যেই প্রায় হাহাকার পড়িয়া গিয়াছে। ।