পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় উল্লাস।


শুনিয়াছিলাম, নবদ্বীপ গৌড় দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজ। মা ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন খুড় সেই সর্বপ্রধান সমাজের সর্বপ্রধান আর্ত্ত। সুতরাং, এ দেশে, স্মৃতিশাস্ত্র বিষয়ে, বিদ্যারত্ন খুড়র জুড়ি নাই। তিনি যে ব্যবস্থা দেন, তাহা, বেদবাক্যের ন্যায়, অভ্রান্ত ও অকাট্য; কেহ, সাহস করিয়া, তাহাতে দোষারোপ করিতে অগ্রসর হয় না। তাঁহার বিষয়ে অনেক প্রশংসার কথা শুনিতাম। এবং, শুনিয়া গুনিয়া, তাঁহার উপর বেয়াড়া ভক্তি জন্মিয়াছিল। কিন্তু, কখনও তাঁহাকে পাপচক্ষে নিরীক্ষণ করি নাই। এজন্য, সদা সর্ব্বাদা মতলব কৱিতাম, যেরূপে পারি, একবার শ্রীমান্ নদিয়ার চাঁদকে নয়নগোচর করিয়া, মানবজন্ম সফল করিব। দৈবযোগে, এক দিন, অশুভ ক্ষণে, বিনা চেষ্টায়, তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম। দেখিয়া কিন্তু, আমার পূর্ব্বসঞ্চিত ভক্তিভাব উড়িয়া গেল। অবাক ও হতজ্ঞান হইয়া, ভাবিতে লাগিলাম, ও মা! ইনিই ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন; ইনিই এ দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজের সর্ব্বপ্রধান স্মার্ত্ত; ইঁহারই এত প্রশংসা শুনিতাম; ইঁহাকেই এত দিন এত ভক্তি করিতাম। বলিতে কি, আমার মনটা বেয়াড়া খারাপ হইয়া গেল।

 আমি পূর্ব্বে কখনও বিদ্যাসাগরকে দেখি নাই। এক দিন ইচ্ছা হইল, সকলে লোকটার এত প্রশংসা করে,