পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
ব্রজবিলাস

দৃষ্ট হইতেছে, সুরাপানে পাপ ও জাতিপাত হেইতেছে না; সাহেবদের মত খানা খাইলে পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হইতেছে না; বিষয়াপন্ন লোকে, গাড়ীতে হাড়ি ও মুসলমান পাচক নিযুক্ত করিয়া, গোমাংস, শূকরমাংস প্রভৃতি বিশুদ্ধ বস্তু পাক করাইয়া খাইলে, পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হইতেছে না; বেশ্যালয়ে, সদ্য মাংস সেবন পুর্ব্বক, আমোদ আহলাদ করিয়া, রাত্রি কাটাইলে, পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হইতেছে না। ফলকথা এই, এ দেশে অপেয়পানে, অভক্ষ্যভক্ষণে, অগম্যাগমনে পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হয়, তাহার কোনও নজির বা নিদর্শন পাওয়া যায় না[১]। এমন স্থলে, উপযুক্ত ভাইপো খুড়র ঘাড় ভাঙিলে, পাপস্পর্শ বা জাতিপাত হইবেক, ইহা, কোনও ক্রমে, আমার, অন্তঃকরণে লইতেছে না। যদিই, উপযুক্ত ভাইপোর কপালগুণে, খুড়র ঘাড় ভাঙিলে পাপস্পর্শ ও জাতিপাত ঘটে, তাহার কি আর নিষ্কৃতি নাই। খুড়র ঘাড় ভাঙিলে, হয় গোহত্যার, নয় ব্রহ্মহত্যার, পাতক হইবেক। শুনিয়াছি, এ উভয়েরই যথোপযুক্ত প্রায়শ্চিত্ত-

  1. যদি বলেন, এ স্থলে তুমি মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, জুয়াচুরি, বাটপাড়ি, জাল সাক্ষী, জাল মোকদ্দমা, প্রভৃতির উল্লেখ করিলে না কেন। তাহার কারণ এই ঐ সমস্ত, পবিত্র সাধুসমাজের নিরন্তর অনুষ্ঠান ও আন্তরিক অনুমোদন দ্বা রা, বহু কাল হইল, সদাচার বলিয়া প্রতিষ্ঠিত হইয়া গিয়াছে। ঐ সকল সাধুসমাজসম্মত সদাচারকে যে অর্ব্বাচীন নরাযধম দোষ বলিয়া উল্লেখ করিবেক, তাহার ইহকালও নাই, পরকালও নাই। এবিষয়ে, আমি শ্রীমতী যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভা দেবীকে সাক্ষিনী করিতেছি।