পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ব্রজবিলাস।

ও অগড়ম বগড়ম বকিতেছি কেন। অখবা, যাঁহারা এইরূপ করেন, তাঁহারা, এ দেশের সাধুসমাজে, বড় আদরণীয় ও প্রশংসনীয় হন, ইহা দেখিয়া, বিষম লোভে পড়িয়া, অসামাল হইয়া, এরূপ করিতে আরম্ভ করিয়াছি। শ্রীল যুক্ত ঘটকচূড়ামণি জনমেজয় বিদ্যাবাগীশ খুড় মহাশয় এ বিষয়ের জাজ্বল্যমান জলজিয়ন্ত দৃষ্টান্ত। এই খুড় মহাশয়, বিধাবা বিবাহের অশাস্ত্রীয়তা ও অযৌক্তিকতা বিষয়ে, এক বিচিত্র বক্তৃতা লিখিয়া, শ্রীমতী বশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভা দেবীর চতুর্থ সাংবৎসরিক অধিবেশনে, পাঠ করিয়াছেন। সভাস্থ মহামহোপাধ্যায় বিদ্যাবাগীশের পাল, ঐ বক্তৃতা শ্রবণে মাত হইয়া, ঘটকচুড়ামণিকে শত শত বার ধন্যবাদ ও কপিরত্ন[১] এই উপাধি দিয়াছেন; এবং শ্রীমতী সভা দেবীও, প্রিয়তম নায়কের বক্তৃতারসে গলিয়া গিয়া, দেশের ধর্ম্মরক্ষার দোহাই দিয়া, ঐ অদ্ভূত বক্তৃতা পুস্তকাকারে মুদ্রিত ও প্রচারিত করিয়াছেন। দেখুন, শ্রীমান্ জনমেজয় খুড় মহাশয়, ধর্ম্মশাস্ত্র বিষয়ে, বর্ণজ্ঞানানবচ্ছিন্ন হইয়াও, নিরবচ্ছিন্ন ফেচফেচ ও ফাজিলচালাকি করিয়া, কেমন ধন্যবাদ মারিয়াছেন। ইহা দেখিয়া, লোভসংবরণ করা, যাহাদের ফাজিলচালাকি করা রোগ আছে, তাহাদের পক্ষে, সহজ ব্যাপার নহে। ধন্যবাদের বাজার এত সভা দেখিয়া, কেইবা ফেচফেচ ও ফাজিলচালাকি করিতে ছাড়িবেক।

 যাহা হউক, এরূপ চমৎকারিণী, চিত্তাহারিণী বক্তৃতার


  1. প্রথম পরিশিষ্ট দেখ।