পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ব্রজবিলাস।

ভাগার বেটার বিষয়বুদ্ধি বড় কম; এমনকি, নাই বলিলেও, বোধ হয়, অন্যায় বলা হয় না। বিষয়বুদ্ধি থাকিলে, তিনি, কখনই, বিধবাঢ় বিবাহকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করিতেন না। বিধবা বিবাহে হাত দিয়া, পবিত্র সাধুসমাজে হেয় ও অশ্রদ্ধেয় হইয়াছেন, সকল লোকের গালাগালি খাইতেছেন, এবং শুনিতে পাই, ঐ উপলক্ষে দেনাগ্রস্তও হইয়াছেন। ইহারই নাম,

আপনার নাক কাটিয়া পয়েন্ন যাত্রাভঙ্গ করা।

এই রকমারিকাণ্ডে লিপ্ত হওয়াতে, তাঁহার নিজের নাকালের চুড়ান্ত হইয়াছে; এবং পুণ্যভূমি ভারতবর্ষকে, বিশেষতঃ, পরম পবিত্র গৌড় দেশকে, সর্বোপরি, সোনার লঙ্কা যশোহরপ্রদেশকে, একবারে ছারখার করিতে বসিয়াছেন। এমন বাঁদরামি, এমন পাগলামি, এমন মাতলামি, কেহ কখনও দেখিয়াছেন বা শুনিয়াছেন, আমার এরূপ বোধ হয় না। বুদ্ধিমান ব্যক্তি মাত্রেই বলিবেন, অথবা বলিবেন কেন, মুক্তকণ্ঠে বলিতেছেন, তিনি, নাম কিনিবার জন্যে, দেশের সর্বনাশের পথ করিয়াছেন। দেখুন, বাটীতে বিধবা থাকিলে, গৃহস্থের কত মত উপকার হয়। প্রথমত, বিনি মাইনায়, রাঁধুনি, চাকরানি, মেথরানি পাওয়া যায়। দ্বিতীয়তঃ, সময়ে সময়ে, বাটীর পুরুষদিগের, প্রকারান্তরে, অনেক উপকার দর্শে; তৃতীয়তঃ, বাটীয় চাকরেরা বিলক্ষণ বশীভূত থাকে, ছাড়াইয়া দিলেও, হতভাগার বেটারা নড়িতে চায় মা; চতুর্থতঃ, প্রতিবাসীরা অসময়ে, বাইতে আইসেন।