পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
ব্রজবিলাস।

কোনও দোষ আছে, এরূপ প্রতীতি জন্মে না দোষের কথা দূরে থাকুক, ব্যভিচার, পূর্ব্ব কালে, সনাতন ধর্ম বলিয়া পরিগণিত ছিল; কেহ তাহাতে কিছুমাত্র দোষ বিবেচনা করিত না। ইহা সত্য বটে, উদ্দালক মুনির পু্ত্র শ্বেতকেতু খুড়, বুড়মি করিয়া, এই সনাতন ধর্মে দোষারোপ করিয়া গিয়াছেন[১]। কিন্তু, তিনি দুনিয়ার মালিক ছিলেন না। তিনি, রাগের বশীভুত হইয়া, না বুঝিয়া সুঝিয়া, এক কথা বলিয়া গিয়াছেন বলিয়া, সকলকে তাহা ঘাড় পাতিয়া লইতে হইবে, তাহার মানে কি। আর, ইহাও বিবেচনা করিয়া দেখা আবশ্যক, ব্যভিচার সনাতন ধর্ম বলিয়া পরিগণিত। সনাতন শব্দের অর্থ নিত্য, যাহার বিনাশ নাই, যাহা সর্ব কাল বিরাজমান থাকে। শ্বেত কেতুর এত বড় ক্ষমতা ছিল না যে, তিনি নিত্য পদার্থের লোপাপত্তি করিতে পারেন। সে ক্ষমতা থাকিলে, সনাতন ব্যভিচার ধর্ম, কোন কালে, লয়প্রাপ্ত হইতেন, একাল পর্য্যন্ত, নির্ব্বিরোধ ও অপ্রতিহত প্রভাবে, রাজত্ব ও একাধিপত্য করিতে পাইতেন না। যাহা হউক, যখন ব্যভিচার সনাতন ধর্ম্ম বলিয়া পরিগণিত, এবং যখন সেই সর্ব্বজীবহিতকর সনাতন ধর্ম, পৃথিবীর সর্ব্ব প্রদেশে, বিশেষতঃ পুণ্যভূমি ভাতবর্ষের পরম পবিত্র সাধুসমাজে, আবহমান কাল, এত প্রবলভাবে প্রচলিত রহিয়াছে, তখন উহাকে দোষ বলিয়া গণ্য করা ঘোরতর অধর্মের কর্ম্ম, তাহার সন্দেহ নাই। অতএব, বিদ্যাসাগর বাবাজি, সাধুসমাজে চির


  1. দ্বিতীয় পরিশিষ্ট দেখ।