পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
ব্রজবিলাস

বসিয়া, শ্লোক পড়িয়া তোষামোদ ও জল উচু নীচু করেন, এবং, যৎকিঞ্চিৎ লাভের লোভসংবরণে অসমর্থ হইয়া, ইহকালে ও পরকালে এক কালে জলাঞ্জলি দিয়া, পয়সাওয়ালাদের খাতিরে, তাঁহাদের অভিমত ব্যবস্থায়, অবিকৃত চিতে, স্ব স্ব নাম স্বাক্ষর করিয়া থাকেন। শ্রীমতী যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভার চতুর্থ সাংবৎসরিক অধিবেশনে নিমন্ত্রিত বিদ্যাবাগীশের পাল, এবং পালের গোদা শ্রীমান্ ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন খুড়, যে ব্যবস্থাপত্রে স্বাক্ষর করিয়াছেন, তাহা এ বিষয়ের সর্ব্বোৎকৃষ্ট দৃষ্টান্তস্থল। আশীর্ব্বাদ করি, পুণ্যশ্লোক, পূজ্যপাদ খুড় মহাশয়েরা চিরজীবী হউন।

 ধর্ম্মকথা বলিতে গেলে, তাঁহাদের ঈদৃশ ব্যবহার, কোনও অংশে, দোষাবহ বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে। কারণ, নীতিশাস্ত্রে ব্যবস্থাপিত আছে,

অর্থস্য পুরুষো দাসঃ।
মানুষ পয়সার গোলাম।

পয়সার জন্যে, মানুষে না করিতে পারে, এমন কর্ম্মই নাই। দেখুন, চুরি, ডাকাইতি, গলায় ছুরি, জুয়াচুরি, বাটপাড়ি, জাল সাক্ষী, জাল দলীল, জাল মোকদ্দমা, মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, প্রতারণা প্রভৃতি এ দেশের লোকের অঙ্গের আভরণ হইয়া উঠিয়াছে। যিনি, যে পরিমাণে, এই সকল বিষয়ে কৃতকার্য্য হইতে পারেন, তিনি, সেই পরিমাণে, সাধুসমাজে, বাহাদুর বলিয়া, গণনীয় ও প্রশংসনীয় হইয়া থাকেন।

 অবশেষে, শ্রীমান্ বিদ্যারত্ন খুড়কে, কিছু উপদেশ দিয়া, এবারকার মত, জাল গুড়াইতেছি।