পাতা:ব্রজাঙ্গনা কাব্য - মাইকেল মধূসুদন দত্ত.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা কবি মধুসূদন বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বহুবিধ নূতন পদ্ধতির প্রবর্তক, ‘ব্রজাঙ্গন কাব্যের রচনা-রীতিও বাংলা দেশে সম্পূর্ণ নূতন ; এগুলি মুরে গেয় মহাজন-পদাবলীও নয়, আবার পালায় বিভক্ত কবি বা পাচালিগানও নয়। মধুসূদন স্বয়ং এগুলিকে Ode আখ্যা দিয়াছেন । অমিত্রাক্ষর ছন্দ ও চতুর্দশপদী কবিতার মত মধুসূদন বাংলায় এই শ্রেণীর গীতিকবিতারও জন্মদাতা। তাহার সৃষ্টি-প্রতিভার অবিসম্বাদিত প্রাধান্ত এই সকল নূতন রীতির উপর স্থাপিত । বহু মহাজন রাধা ও কৃষ্ণের প্রেম-বিরহু লইয়া কাৰ্য রচনা করিয়াছেন । বাংলা-সাহিত্যের আদিমতম যুগ হইতে আজ পর্য্যস্ত কাব্যকারগণ এই লোভনীয় বিষয়ের মায়া ত্যাগ করিতে পারেন নাই । প্রেমিক কবি মধুসূদনও রাধাকৃষ্ণকে কেন্দ্র করিয়া কাব্য-রচনার সুযোগ পরিত্যাগ করেন নাই । তিনি বিচিত্র ছন্দে রাধা-বিরহের গান গাহিয়াছেন । অনেকে ইহার মধ্যে প্রাচীন পদ্ধতির সহিত গরমিল অথবা ইউরোপীয় ভাবের ছায়া দেখিয়াছেন, কিন্তু আসলে এই কাব্যের পংক্তিতে পংক্তিতে যে একটি ভাবে স্মত্ত বাঙালী কবি-চিত্তের সংস্পর্শ আছে, তাহাও অস্বীকার করিবার উপায় নাই । সৰ্ব্বাপেক্ষা বিস্ময়ের বিষয়, মধুসূদন যখন সদ্য-আবিষ্কৃত অমিত্রাক্ষর ছন্দের পরীক্ষা করিতেছিলেন, তখনই এই সঙ্গীতমুখর মিল-বহুল কাব্যটি রচিত হইয়াছে । কাব্য বা বিষয়ের বৈচিত্র্য-বিচার আমাদের এই ভূমিকার উদ্দেশ্য নয়। র্তাহার জীবনী ও পত্রাবলী হইতে এই পুস্তকরচনার কাহিনী যেটুকু পাওয়া যায়, সেইটুকুই এখানে লিপিবদ্ধ झद्देज ! অমিত্র ছন্দে তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য রচনার সময়ে মধুসূদন সন্তৰত: মুখ বদলাইবার জন্যই ‘ব্রজাঙ্গন কাব্য রচনায় হস্তক্ষেপ করেন । তিনি এই কালে নিধু গুপ্ত, রাম বস্থ, হরু ঠাকুর প্রভৃতির গীতি-কাব্য ও জয়দেববিভাপতির পদাবলী বিশেষভাৰে আলোচনা করিতেছিলেন । ১৮৬০