পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম উপদেশ।

সকলে মিলিয়া তাঁহার জ্ঞান ও মঙ্গলাভিপ্রায়ের পরিচয় দিতেছে। তিনি আছেন, এই মাত্র বলিলে তাঁহার কিছুই বলা হয় না। তিনি আছেন, এবং তিনি জ্ঞান-স্বরূপ ও মঙ্গল-স্বরূপ। তাঁহার জ্ঞান ও মঙ্গল-ভাবের কি সীমা হয়? না, তিনি অনন্ত জ্ঞান—তিনি পূর্ণ মঙ্গল। জগতের কারণ ঈশ্বর আছেন, কিন্তু তাঁহার জ্ঞান নাই, এমন কথনই হয় না। জগতের কারণ জ্ঞানবান্ পুরুষ আছেন, কিন্তু তাঁহার মঙ্গল-ভাব নাই, ইহাও বলা যায় না। তিনি যে এই জগৎ সৃজন করিয়াছেন, তাহা অমঙ্গলের জন্য—তবে তিনি ঈশ্বর নহেন; কোন ভীষণ দৈত্য কিম্বা অসুর এই বিশ্বের রচয়িতা। ঈশ্বর আছেন তাহার সঙ্গে সঙ্গে এই দুইটা লক্ষণ স্পষ্ট রহিয়াছে যে তিনি জ্ঞান-স্বরূপ এবং মঙ্গলস্বরূপ। আমরা মনুষ্যের আকৃতি ও তাহার জ্ঞান ধর্ম্ম মনে না করিয়া মনুষ্যকে ভাবিলে, যেমন মনুষ্যের ভাব আমারদের মনে আইসে না, সেই রূপ ঈশ্বরের জ্ঞান এবং তাঁহার মঙ্গল-ভাব অবগত না হইলে ঈশ্বর শব্দের অর্থই বোধগম্য হয় না। তাঁহার জ্ঞান নাই, তবে তিনি জড়; তাঁহার মঙ্গল ভাব নাই, তবে তিনি নিষ্ঠ‌ুর অসুর বা নির্দয় দৈত্য। সমুদায় সৃষ্টি প্রক্রিয়াই তাঁহার জ্ঞান ও মঙ্গল সঙ্কল্প প্রচার করিতেছে। এমন নিয়ম নাই, যাহাতে তাঁহার দুর্ব্বিগাহ মঙ্গল অভিপ্রায় প্রকাশিত না রহিয়াছে। এমন কার্য্য নাই, যাহাতে তাঁহার অসীম জ্ঞান প্রকাশ না পাইতেছে। এই দুই লক্ষণ তাঁহার স্বরূপের প্রধান লক্ষণ। ঈশ্বরের স্বরূপ হইতে এই দুই লক্ষণ প্রত্যাহার