পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বরের অস্তিত্ব এবং লক্ষণ।

 যখন তাঁহার শক্তির বিষয় বিবেচনা করি, তখন তাঁহাকে অয়ন্ত শক্তি ও সর্ব্বশক্তিমান্ বলিয়া প্রত্যয় যাই। আমাদের অভিপ্রায়ও যদি মঙ্গল হয়, তবে শক্তির অভাবে হয় তো তাহা সম্পন্ন হয় না। কিন্তু তাঁহার সে প্রকার নয়। তাঁহার ইচ্ছা মঙ্গলময়ী এবং তাঁহার যাহা ইচ্ছ তাহাই হইতেছে এবং পরেও তাহাই হইবে। তাঁহার অপরিসীম শক্তির প্রভাবে সমুদয় পদার্থ নিজ নিজ শক্তি ধারণ করিয়াছে। এখানে যত জড় রাশি, যত প্রাণি জঙ্গম, উপরে যত প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড লোক মণ্ডল, যত লোক-নিবাসী জীবপুঞ্জ, যত প্রকার সূক্ষ্মাণুসূক্ষ্ম কৌশল সমূহ, তাহাতেই যে তাঁহার শক্তির পরিসমাপ্তি হইয়াছে, এমত নহে। তাঁহার শক্তির ক্রটি নাই। তিনি বিচিত্র শক্তি এবং তিনি সর্ব্বশক্তিমান্। তিনি সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের এক মাত্র কারণ। তিনি যাহা ইচ্ছা করেন, তাহাই করিতে পারেন।

 আবার যখন তাঁহার অনন্ত ভাব কালের সঙ্গে সংযোগ করি, তখন তাঁহাকে নিত্য শব্দে ব্যক্ত করি। তিনি পূর্ব্বেও ছিলেন, অদ্যও আছেন, তিনি পরেও থাকিবেন। যখন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই, তখনও তিনি ছিলেন এবং যদি সমুদয়ই বিনাশ পায়, তথাপি তিনি থাকিবেন। কাল সহকাৱে তাঁহার স্বরূপের পরিবর্ত্তন নাই। তিনি ধ্রুব—তিনি অপরিবর্ত্তনীয়। তিনি সর্ব্বকালে সমভাবে স্থিতি করিতেছেন।

 তিনি সর্ব্বব্যাপী—দেশেতে তাঁহার সীমা হয় না। তিনি কোন এক দেশে বসিয়া রাজত্ব করিতেছেন, এমত নহে।