পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম উপদেশ।

সমুদয় জগৎই তাঁহার আবাস স্থান, আমাদের আত্মাও তাঁহার আসন। তিনি অচিন্ত্য-দূরস্থিত নক্ষত্রেও আছেন, এবং সকল অপেক্ষা নিকটের বস্তু যে আমি, আমাতেও তিনি আছেন। তাঁহাকে পাইবার জন্য স্থান বিশেষ অন্বেষণ করিতে হয় না, এবং স্থান বিশেষ হইতে দূরে গেলেও তাঁহা হইতে দূরস্থ হওয়া যায় না।

 তিনি নিয়ন্তা, নিয়ন্তা ব্যতীত নিয়ম হয় না, নিয়ম কথন কোন কার্য্যের স্বয়ং কর্ত্তা হইতে পারে না। নিয়ম বলিলেই তাহার সঙ্গে সঙ্গে তাহার নিয়ন্তাকেও বলা হয়। ঈশ্বর এখানে কেবল উদাসীনের ন্যায় রহিয়াছেন, এমত নহে; তিনি সকলের নিয়ন্তা রূপে, সকলের যন্ত্রী রূপে বিদ্যমান আছেন। তাঁহার নিয়মের অধীনে থাকিয়া সকলেই তাঁহার আজ্ঞা পালন করিতেছে।

 তিনি সর্ব্বাশ্রয়, তাঁহাকে অবলম্বন করিয়া সকলে স্ব স্ব কার্য্যে নিযুক্ত রহিয়াছে। তিনি একাকী সকলেরই আধারভূত—আর সকলই তাঁহার আশ্রিত। পূর্ব্বে যখন ইহার কিছুই সৃষ্টি হয় নাই, তখনও তাহার সৃজন-শক্তি তাহাতেই অব্যক্ত রূপে নিহিত ছিল। এক্ষণে সেই শক্তি কার্য্যেতে পরিষ্ফ‌ুট হইয়া যাহা কিছু উৎপন্ন হইয়াছে, সে সকলই সেই শক্তিকে অবলম্বন করিয়া নিয়তই চলিতেছে। বৃক্ষ কখন মূল হইতে পৃথক্ থাকিতে পারে না। মা, জগৎ সংসারেও কখন জগৎ কর্ত্তা হইতে নিচ্ছিন্ন থাকিতে পারে না। তিনি লোক ভঙ্গ নিবারণের সেতু স্বরূপ হইয়াছেন। তাঁহার ইচ্ছার অসদ্ভাবে সমুদায়ই