পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমেশ্বর আনন্দ স্বরূপ।
১৫

আর কে রক্ষা করিতে পারে? “স সেতুর্ব্বিধৃতিরেষাং লোকানাম্ অসম্ভেদায়।”


তৃতীয় উপদেশ।


পরমেশ্বর আনন্দস্বরূপ।

 পরমেশ্বর আনন্দ স্বরূপ। যে সকল পবিত্র-চিত্ত মহাত্মার পরব্রহ্মকে প্রাপ্ত হইয়া সুমহান্ আনন্দ লাভ করিয়াছেন, তাঁহারা তাঁহাকে আনন্দ-স্বরূপ বলিয়া ব্যক্ত করিয়াছেন। পরমেশ্বর নির্ব্বিশেষ; তাঁহার কোন বিশেষ নাম নাই। সেই বিশ্বব্যাপী পরমাত্মাকে না চক্ষু দ্বারা দর্শন করা যায়; না হস্ত দ্বারা গ্রহণ করা যাইতে পারে। যখন তাঁহার নিষ্কলঙ্ক পবিত্র স্বরূপ—যখন তাঁহার সুমধুর মঙ্গল ভাব আমাদের বিশুদ্ধ বুদ্ধিতে প্রতিভাত হয়; যখন তাঁহার সন্নিকর্ষ আত্মার নিকটে উজ্জ্বল রূপে প্রকাশ পায়; তখন যে এক অনুপম স্বর্গীয় আনন্দ উপস্থিত হয়, তাহাতেই তাঁহার নিগূঢ় সত্তা উপলব্ধি হয়। মনের সঙ্গে বিষয়ের যেমন এক প্রকার সম্বন্ধ—পরমাত্মার সহিত আত্মারও সেই রূপ অতি নৈকট্য সম্বন্ধ রহিয়াছে। প্রিয় রস আস্বাদনে বা প্রিয় স্বর শ্রবণে মনেতে যেমন এক প্রকার সুখের সঞ্চার হয়; সেই রূপ ঈশ্বরের বিশুদ্ধ ভাব অনুভূত হইলে, আত্মাতে এক পবিত্র আনন্দরসের সঞ্চার হইয়া থাকে।