পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমেশ্বর আনন্দ স্বরূপ।

ঈশ্বর কেবল ন্যায়বান্ রাজা নছেন, তিনি আমাদের করুণময় পিতা, আমাদের মঙ্গল সাধনই তাঁহার উদ্দেশ্য। আমরা অতি ক্ষীণস্বভাব; আমাদের এক বারও ধর্মপথ হইতে পদ স্থলিত হইবে না, এমন কথনই সম্ভব হয় না। আমরা যদি এক বার পতিত হইয়া সেই পতিত-পাবনের প্রসাদ হইতে এক কালে বঞ্চিত হই, তবে আমাদের উপায় কি—তবে আমাদের নিস্তার কোথায়! যখন পিতার নিকটে ক্রন্দন করিলে তিনি প্রসন্ন হইয়া আমাদের অপরাধ মার্জ্জনা করেন, যখন সাধু ব্যক্তির নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করিলে তিনি প্রশস্ত চিত্তে ক্ষমা বিতরণ করেন; তখন যিনি আমাদের পরম পিতা—যিনি পূর্ণ-মঙ্গল ও করুণাময় পাতা, তিনি কি অনুতাপিত হৃদয়কে কখনই শীতল করিবেন না। তিনি কি তাহার পতিত সন্তানের অকৃত্রিম ভাব দেখিলে ক্ষমা বিতরণে বিরত হইবেন? কখনই না। পরমেশ্বর যেমন রোগ শান্তির জন্য ঔষধের সৃজন করিয়াছেন, সেই প্রকার পাপের প্রতীকারের জন্য বিবিধ উপায় করিয়া দিয়াছেন। রোগী ব্যক্তি রোগ হইতে মুক্ত হইলেই যেমন আপনা আপনি জানিতে পারে, পাপীর ভাবও সেই প্রকার। যখন মন পাপেতে আসক্ত ও পতিত হয়, তখন তাহা আপনিই বুঝা যায় এবং যখন সে সেই পাপ হইতে পরিত্রাণ পায়, তখনও সহজে বুঝা যায় এবং তাহা বুঝিবার জন্য অন্যের সহিত মন্ত্রণা আবশ্যক হয় না। আত্ম-গ্লানি মনের রোগের লক্ষণ—আত্ম—প্রসাদই তাহার সুস্থতার লক্ষণ।