পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বর সত্য-স্বরূপ।
২৫

হয় না। আমরা জীবিত মনুষ্যকে যে প্রকার সত্য মনে করি, তাহার মৃত শরীরকেও কি সেই প্রকার জ্ঞান করিয়া থাকি? এই যে সন্মুখে অচল অটল স্তব্ধ মৃতুর রূপ প্রাচীর দেখা যাইতেছে, ইহা কি সত্য? না আমি যে প্রাচীরকে দেখিতেছি, সেই সত্য পদার্থ? জড় যদি সত্য না হয়, তবে কি আমাদের জীবাত্মাই সত্য? জড় হইতে জীবাত্মা সত্য, কেন না জীবাত্মার জ্ঞান আছে, চেতন আছে। কিন্তু জীবাত্মার জ্ঞানও আছে, অজ্ঞানও আছে—জীবাত্মা কতক দেখিতেছে, কতক দেখিতে পায় না—জীবাত্মা কখন জাগ্রৎ, কখন নিদ্রিত -জীবাত্মা এক সময়ে ছিল না এবং যে পূর্ণ-পুরুষের আশ্রয়ে থাকিয়া জীবিত রহিয়াছে, তাঁহার ইচ্ছা হইলে পরেও থাকিবেক না। জীবাত্মার সকল বিষয়েরই সীমা আছে,পরিমাণ আছে। এই প্রকার সীমাবিশিষ্ট পরিমিত বস্তু যে আমাদের জীবাত্মা, তাহাকে যদি সত্য বলা যাইতে পারে, তবে পূর্ণ জ্ঞান ঈশ্বর কেমন সত্য! যিনি সর্ব্বজ্ঞ—যিনি আন্তর্যামী—যিনি ভূত ভবিষ্যৎ বর্ত্তমান সকল কালের প্রতিই সমান রূপ দৃষ্টি করিতেছেন; সেই সত্য পুরুষের তুলনায় আমারদের এই জীবাত্মাকেও সত্য বসিয়া বোধ হয় না। ঈশ্বর যিনি তিনিই সত্য—সত্য যিনি তিনিই ঈশ্বর।

 কিন্তু সত্য বস্তু—জ্ঞান বস্তু, প্রাণবিশিষ্ট কি প্রাণশূন্য, জীবিত কি মৃত? পূর্ণ-জ্ঞান-স্বরূপের জ্ঞানই প্রাণ। তিনি সত্যস্বরূপ- তিনি পূর্ণ-জ্ঞান; অথচ তিনি প্রাণ-শূন্য মৃত বস্তু; এ দুই পরস্পর বিরুদ্ধ বাক্য। যিনি সত্যস্বরূপ,