পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বর সত্য-স্বরূপ।
২৯

তিনিই পরম সত্য নিত্য পদার্থ। আমরা এখানে যে কোন পদার্থ দেখিতে পাই, সকলই আশ্রিত পরিমিত অন্তবৎ পদার্থ। কিন্তু যিনি সর্ব্বশ্রয় অপরিমেয় অনন্ত পদার্থ, তিনিই সত্য। সকল সৃষ্ট বস্তুরই কোন না কোন বিষয়ে অভাব আছে, কিন্তু যাঁহার অভাব নাই, যিনি পরিপূর্ণ, তিনিই পারমার্থিক সত্য বস্তু। ঈশ্বরের প্রতি লক্ষ্য করিয়াই সত্য বলা উচিত। এই এক শব্দে তাঁহার সকল তত্ত্বের উদ্বোধন হয়। সত্যের ভাব সকলেরই বুদ্ধি-ভূমিতে নিহিত আছে—সেই ভাব পরিস্ফুটিত হইলে দেখা যায় যে কেবল একমাত্র ঈশ্বরই সেই সত্য ভাবের বিষয়; ঈশ্বর ভিন্ন আর কোথাও সত্য শব্দ সংলগ্ন হয় না—সত্যের পর্যাপ্তি হয়। আমরা সত্যের যে সকল লক্ষণ প্রাপ্ত হইতেছি, তাহার সমুদয় লক্ষণ কেবল ঈশ্বরেতেই প্রাপ্ত হইতেছি।

 সত্য যে বস্তু, তাহা কখন জড়বৎ মৃত বস্তু নহে; অতএব অমৃত চেতা ঈশ্বরই সত্য। সত্য যে বস্তু, তাহা কোন সময়ে আছে, কোন সময়ে নাই, এমত নহে; অতএব নিত্য পরমেশ্বরই সত্য। সত্য যে বস্তু তাহার উপরে কালের অধিকার নাই; কালেতে করিয়া তাহার ক্ষয় হয় না, তাহার পরিবর্ত্তন হয় না; অতএব অপরিবর্ত্তনীয় ধ্রুব ঈশ্বরই সত্য। সত্যের উপরে দেশের অধিকার নাই, দেশ তাঁহাকে সীমাবদ্ধ করিতে পারে না; অতএব সর্ব্বব্যাপী তাপরিসীম ঈশ্বরই সত্য। সত্য যে বস্তু, তাহা কতক ভাল কতক মন্দ,তাহার কতক সদ্ভাব কতক অসদ্ভাব, এপ্রকার নহে; অতএব পূর্ণ-মঙ্গল-ভাব পরমেশ্বরই সত্য।