পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
পঞ্চম উপদেশ।

হ্রাস দেখিয়াও তো সেই রূপ বলিতে পারেন? বিষয়-সুখ যদি ধর্ম্মের যথার্থ বিষয় হইত, তবে ধার্ম্মিক ব্যক্তিরাই অধিক বিষয়ী হইত; তবে ধর্ম্মের যত উপার্জন হইত, ইন্দ্রিয় সকল ততই বিবৃত দ্বার হইত, বিষয় লালসা ততই বৃদ্ধি হইত, ভোগের শক্তি ততই প্রবলা হইত। কিন্তু বাস্তবিক ঠিক তাহার বিপরীত। ব্রহ্ম-রসগ্রহ ধার্ম্মিক বৃদ্ধ দিন দিন আপনাকে স্বীয় গম্য স্থানের নিকট জানিয়া সর্ব্বদাই প্রসন্ন ও হৃষ্ট থাকেন; বিষয়-ভোগের লালসা তাঁহাকে আর সুখ বা দুঃখ দিতে পারে না।

 ধর্ম্মপরায়ণ সাধু ব্যক্তিরা বিষয়-সুখ হইতে বিরত হন বলিয়া যে পাপী ব্যক্তি নির্ব্বিঘ্নে থাকে, এমত নহে। পাপীর যে যন্ত্রণা সে সেই পাপী জানে, আর সেই অন্তর্যামী পুরুষই জানেন। তাহাদের যদি ধন, মান, ঐশর্য্য; অশ্ব, রথ, গজ, পর্য্যঙ্ক থাকে, তাহাতেই বা কি? তাহারা নরক সমান স্বকীয় হৃদয় জ্বালাতেই সর্ব্বদা অস্থির, তাহাদের কোন সুখ উপভোগের ক্ষমতাই থাকে না। তাহাদের নিকটে এই জগৎ দাব-দাহময় হয়। তথাপি করুণা-সিন্ধু পরমেশ্বর তাহারদিগকে পরিত্যাগ করেন না। তাহারদিগকে আপনিই দণ্ড বিধান দ্বারা বিপথ হইতে স্বপথে আহ্বান করেন।