পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষয়-সুখ এবং ব্রহ্মানন্দ।
৪৫

অবস্থাতে তাঁহারা কর্ত্তব্য কর্ম্ম সম্পন্ন করিয়াই মুখী থাকেন। ধন পাইলেও তাঁহাদের এক প্রকার কর্ত্তব্য; দরিদ্রাবস্থাতেও তাঁহাদের অন্যরূপ কর্তব্য। তাঁহারা যে কোন কর্ম্ম করেন, তাহা ঈশরেতেই সমর্পণ করেন; তাঁহার প্রিয় কার্য্য হইতে কেহই তাঁহারদিগকে আকৃষ্ট করিতে পারে না! তাঁহারা সেই মহান্ সুরুষকে প্রাপ্ত হইয়া কি মহত্ত্বই প্রাপ্ত হইয়াছেন; তাঁহারা সেই সকল সম্পদের সম্পদকে পাইয়া সুসম্পন্ন হইয়াছেন।

 বিষয়-সুখেই যদি আমরা প্রমত্ত থাকি—সংসার ভিন্ন যদি আমারদের নিকটে আর সকলই অসার হয়; তবে আমরা আমাদের মহত্ত্বর শ্রেষ্ঠতর অধিকার হইতে প্রচ্যুত হই। ঈশ্বরের সহিত আমারদের যে সকল সম্বন্ধ, তাহা অননুভূত থাকে। ধর্ম্মের যে সকল মহান্ ভাব, তাহা অব্যক্ত রূপে স্থিতি করে। সুখই যাহাদের ধর্ম্ম এবং দুঃখই পাপ, নিঃস্বার্থ ভাব যে কি, তাহা তাহারা কি প্রকারে বুঝিবে? ব্রহ্মপরায়ণ ব্যক্তি যে ধর্ম্মের জন্য অনায়াসে প্রাণ দান করিতে উদ্যত, তাঁহারদিগের নিকটে সে কেবল ভ্রান্তি মাত্র। ঈশ্বর প্রীতি যে মনুষ্যকে দেবত্ব পদ স্থাপিত করে, সে কল্পনা মাত্র। সেই পণ্ডিতম্মন্য ব্যক্তিগণ অশেষ শাস্ত্র-সিন্ধু মন্থন করিয়া এই স্থির করেন, যে মনুষ্যের সকল কর্ম্মের সমুদয় ধর্ম্মের লক্ষ্য কেবল স্বার্থপরতা। তাহারা মনুষ্যের মহদ্ভাব-সকলকে পশু ভাবের তুল্য করিতে চাহে এবং তাহার জ্ঞান ধর্ম্ম-বুদ্ধি সম্পন্ন আত্মাকে জড় করিতে চাহে। তাহারা মনুয্যের আশা,