পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
সপ্তম উপদেশ।

প্রতিবন্ধক পাইলে সে প্রমাণ আরো দৃঢ়তর হয়; কিন্তু আপনাকে জানিবার জন্য আর প্রমাণের আবশ্যক করে না, অন্য সাক্ষীর সাক্ষ্যতার তার প্রয়োজন হয় না; যেহেতু আপনার সাক্ষী আপনিই। আত্মজ্ঞান কেবল মনুয্যেরই আছে। মনুষ্য আত্মজ্ঞান বিহীন হুইলে সে নিশাগ্রন্তু ব্যক্তির ন্যায় কার্য্য করে। নিশাগ্রস্ত ব্যক্তি যেমন স্বপ্নেতে আপনাকে না জানিয়া কর্ম্ম করিতে থাকে এবং তাহাকে কেবল জাগ্রত করিয়া দিলেই সে সকল বুঝিতে পারে; সেই রূপ মনুষ্যও যখন আত্মজ্ঞান শূন্য হইয়া কার্য্য করে, তখন তাহাকে কেবল জাগ্রৎ করিয়া দিবার আবশ্যক। পশুদের আত্মজ্ঞান নাই—তাহারা কর্ত্তৃত্ব বুঝিয়া কার্য্য করে না, বিষয়াকর্ষণেই ধাবিত হয়। মনুয্যর আত্মজ্ঞান আছে, কিন্তু তাহারা কখন কখন আত্ম বিস্মৃত হয়, তাহার বিস্মৃতি ভঙ্গের নিমিত্তে তাহাকে জাগ্রৎ করিয়া দিলেই হয়। মনুষ্যের এক এক সময়ে এমন হীন অবস্থা হইয়া পড়ে, যে সে আর আপনার প্রতি দৃষ্টি করে না। যাহার দৈর্ঘ্য প্রস্থ আছে—যাহা দেখা যায় স্পর্শ করা যায়, তাহাই সে সত্য মনে করে, আর যাহা হ্রস্ব দীর্ঘ নহে, যাহা অদৃশ্য তাহাই তাহার নিকটে অসত্য রূপে প্রতীয়মাণ হয়। কিন্তু বস্তুতঃ ঠিক তার বিপরীত। বরং দৈর্ষ্য প্রস্থ বিশিষ্ট বস্তুর প্রতি সংশয় জন্মিতে পারে, কিন্তু আমাকে আমি কখনই সংশয় করিতে পারি না। সংশয় করে কে? না আমি; অতএব আমি আছি, নতুবা আমার সংশয়ও মিথ্যা; এসময়ে সংশয় আপ-