পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৷৹

ন্দর্য্য গ্রহণ করি। আমরা যখনি কোন সুরম্য পুষ্প, বা স্পৃহণীয় চন্দ্রমা, বা তারকা-সঙ্ক‌ুল-গগনের প্রতি দৃষ্টি করি; তখন আমরা কি দেখি? তাহাদের আকৃতি বিস্তৃতি প্রভৃতি যে তাহাদের জড়ীয় গুণ, কেবল তাহা দেখি না; তাহা আপেক্ষাও অধিক দেখি। সেই সকল জড় পিণ্ডের মধ্যে আমরা শোভা দর্শন করি। এই শোভার জ্ঞান আমারদের পরোক্ষ জ্ঞান নহে, তাহা প্রত্যক্ষ জ্ঞান; কিন্তু যখনি আমি সেই শোভা অন্যের নিকটে ব্যক্ত করি, অথবা তাহা দেখিবার পরে পুনর্ব্বার তাহা ভাবিতে যাই। ভামনি বুদ্ধি আসিয়া তাহার উপরে কার্য্য করিতে থাকে। সঙ্গীতের বিষয়েও এই রূপ। প্রথমে আমরা সহজ-জ্ঞান দ্বারা সঙ্গীত-রস গ্রহণ করি, তাহা যদি না পারিতাম। তবে সঙ্গীতের ব্যাকরণ বুঝাইয়া, সমুদায় সঙ্গীত-সূত্র নির্ব্বাচন করিয়াও কেহ আমারদিগকে সঙ্গীতের ভাব বুঝাইয়া দিতে পারিত না। কিন্তু আমি সঙ্গীত রসজ্ঞ হইয়া যদি সঙ্গীতের এক ব্যাকরণ রচনা করি, তবে সে স্কুলে তাহা বুদ্ধির হস্ত দিয়া বাহির হইল। শোভার জ্ঞান সঙ্গীতের ভাব, আমরা এমন সহজে পাই, যে শোভা দেখা, সঙ্গীত রস পান করা, ভাষায় এই সকল বাক্যই প্রচলিত হইয়াছে।

 ধর্ম্ম এবং ঈশ্বরের বিষয়েও এই রূপ। আমাদের স্বাভবিক ধর্ম্ম-জ্ঞান প্রত্যক্ষ জ্ঞানের ন্যায় অতি সহজ। আমরা স্বাভাবিক ধর্ম্ম-বুদ্ধি হইতে যে সকল বিষয় দেখিতে পাই, তাহা আর ছায়ার ন্যায় দেখি না, কিন্তু প্রত্যক্ষবৎ দেখি—কর্ত্তব্য, ন্যায়, সত্য, এ সকল কল্পনা মাত্র বোধ হয় না,