পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরলোক।
৫১

পরিণত হইয়া উদ্ভিজ্জের বুদ্ধি বিষয়ে সাহায্য করিতেছে। মৃত দেহের প্রত্যেক অঙ্গ, প্রত্যেক অস্থি, প্রত্যেক পরমাণু বিচ্ছিন্ন হইতেছে; কিন্তু তাহার কিছুই বিনষ্ট হইতেছে। অতএব কোন্ উপমিতি দ্বারা ইহা সপ্রমাণ হয় যে মৃত্যুর পরে আত্মারই বিনাশ হইবে। যখন একটি জড়ীয় পরমাণু বিনষ্ট হইতে পারে না, তখন কি ঈশ্বর আত্মার বিনাশই ইচ্ছা করিবেন।

 কিন্তু মৃত্যুকালে শরীর যেমন ভঙ্গ হইয়া যায়, আত্মার কি সেই রূপে ভঙ্গও হইতে পারে? ইহার উত্তর না। শরীর পরমাণু বিশিষ্ট; জীবাত্মা একই বস্তু। শরীর অবয়ব বিশিষ্ট; জীবাত্মা অবয়ব বজ্জিত। জীবাত্মা আকাশে নাই; অতএব তাহা বিস্তৃতি শূন্য। জীবাত্মা একই বস্তু, ইহার জন্য বহু তর প্রমাণ ও যুক্তির অবশ্যক করে না। আমি একই; দুই নহি, তিন নহি; ইহা আমাদের আত্ম-প্রত্যয়-সিদ্ধ। যদি কাহাকেও জিজ্ঞাসা করা যায়, তুমি কয় জন? তাহা হইলে সে এই প্রশ্নে হাস্য করিবে। আমাদের শরীরের যদিও সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তন হইতেছে, কিন্তু যে আমি পূর্ব্বেও ছিলাম, সেই আমি এখনও আছি; এই জ্ঞানটি প্রত্যেক মানসিক ক্রিয়ার মূলেই নিহিত রহিয়াছে। আমাদের বিচিত্র ভাব—বিচিত্র মনোবৃত্তি; এই একই বস্তুতে অনুভব করি। আমি একই, এই জ্ঞানটি না থাকিলে আমরা কোন বিষয়কেই বিষয় বলিয়া অবধারণ করিতে পারিতাম না; সকলই আমাদের নিকটে অসম্বদ্ধ বিচ্ছিন্ন হইত এবং আমা-