পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরলোক।
৫৩

হয়, এ দ্রুত বেগে সঞ্চিত হয়, যে বাক্য তাহা বলিতে গিয়া স্তব্ধ হয়। দেখিবার জন্য আত্মার চক্ষু-রূপ দুই গবাক্ষ চাই; গমন করিবার জন্য পদ রূপ দুই ক্ষীণ যষ্টি আবশ্যক করে। সাক্ষাৎ মৃত্যুর প্রতিকৃতি নিদ্রা প্রতি রজনীতে আত্মাকে মৃতবৎ করে। এখানে আত্ম মৃত্যু আর অমৃতের সন্ধি স্থানে রহিয়াছে। আমৃত ধামই তাহার যথার্থ ধাম; মুক্ত ভাবই তাহার স্বাভাবিক ভাব। যত দিন আমাদের আত্মা কারা-বদ্ধ, তত দিন জীবিত, মুক্ত হইলেই মৃত; এঅতি ভয়ানক কথা! ইহা সত্য হইলে পৃথিবীর সমুদয় ঘটনাই অসংলগ্ন হয়; মনুষ্যের জীবন সম্পূর্ণরূপে নিস্ফল হয়। ঈশ্বরের মঙ্গল-স্বরূপের উপরে নির্ভর করিয়া একথা কেহই বলিতে পারেন না। শরীর আমাদের সর্ব্বস্ব নয়, আত্মাই সার পদার্থ। শরীর এবং আত্মার যোগ হওয়াই আশ্চর্য ব্যাপার; আত্মা পৃথক্ থাকা কিছুই আশ্চর্য্য নহে। পরীর ব্যতীত যে জীবাত্মা থাকিতে পারে, ইহা মনে করা অতি সহজ; শরীরের সহিত তাহার কি রূপে সম্বন্ধ হইল, ইহাই বুঝা কঠিন।

 পরকালের প্রত্যয় চতুর্দ্দিক্ হইতেই দ্রঢ়ীভূত হইতেছে। বিশেষতঃ যখন আমরা আমাদের কর্ত্তৃত্ব বুঝিতে পারি, তখন পরকালের বিশ্বাস অত্যন্ত উজ্জ্বল হয়। যখন আমরা বিষয়ের প্রতিকূলে গিয়া আপনাকে স্বতন্ত্র রূপে উপলব্ধি করিতে পারি—তখন পরকালের ছায়া এখানেই দেখিতে পাই। শত শত যুক্তি একত্র হইলেও আমারদিগকে এই কর্ত্তৃত্ব জ্ঞান হইতে বঞ্চিত করিতে পারে না। আমাদের