পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
অষ্টম উপদেশ।

পুণ্যের ফলাফল ন্যায্য রূপে বিধান করিবেন। আমরা সহজ জ্ঞানে যাহা পাইতেছি, ব্রাহ্মধর্ম্মে সংক্ষেপের মধ্যে তাহার সকলই আছে। “পূণ্যং কুর্ব্বন্ পুণ্যকীর্ত্তিঃ পুণ্যং স্থানং স্ম গচ্ছতি। পাপং কুর্ব্বন্ পাপকীর্ত্তিঃ পাপমেবাশ্মুতে ফলং।” কিন্তু সেই পুণ্যফল আর পাপফল বিশেষ করিয়া বলিতে গিয়াই নানা ভ্রমের উৎপত্তি হইয়াছে। ধর্ম্মেতেই মুখ এবং পাপেতেই দুঃখ, এই আমরা সহজ জ্ঞানে জনিয়েছি। কিন্তু যেখানে সেই সুখের ভাব ও দুঃখের ভাব সবিশেষ বর্ণন করা হইয়াছে, সেখানে সত্যের পরিবর্ত্তে কল্পনাই স্থান পাইতেছে। ধর্ম্মের সঙ্গে সুখের কি প্রকার আর পাপের সঙ্গেও দুঃখেরই বা কি প্রকার সম্বন্ধ, তাহা বিবেচনা করিয়া দেখিলেই স্বর্গ নরকের ভাব অনেক বুঝা যাইবে।

 সুখ কি? আমাদের সমুদয় বৃত্তির চরিতার্থতাতেই সুখ। আমাদের কোন এক বৃত্তি নিদ্রিত থাকিলে সুখের একটি দ্বার রুদ্ধ হইল। মনুষ্যের ইন্দ্রিয়-প্রবৃত্তি-সকল বাহ্য বিষয়ের প্রতি উন্মুখ রহিয়াছে, তাঁহার মানস-রসনা সৌন্দর্য্য রসপান করিবার জন্য উৎসুক রহিয়াছে, তাঁহার বুদ্ধিবৃত্তি সকল জ্ঞান এবং সত্যের দিকেই প্রসারিত হইতেছে, তাঁহার হৃদয় প্রেম-ক্ষুধা শান্তির নিমিত্তে নিয়ত ব্যাকুলিত হইতেছে, তাঁহার ধর্ম্ম-প্রকৃতি শ্রেয়কে অবলম্বন করিয়াই চরিতার্থ হইতেছে এবং তজ্জনিত বিমল আত্ম-প্রসাদেই পরম পরিতোষ প্রাপ্ত হইতেছে, তাঁহার ঈশ্বর-স্পৃহা বিষয়ের স্থূল আবরণ ছেদ করিয়া অদৃশ্য অলক্ষ্য বিষয়া—