পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বর্গ ও নরক।
৫৯

তীত ঈশ্বরকে পাইয়া চরিতার্থ হইতেছে। মনুষ্য যদি সম্পূর্ণ রূপে সুখী হইতে চাহেন, তবে তাঁহার জন্য অর্থ, জ্ঞান, প্রেম, ধর্ম্ম, ঈশ্বর, এ সকলই আবশ্যক। আমাদের কোন এক বৃত্তি কোন এক ইচ্ছা অসম্পন্ন থাকিলে তজ্জনিত সুখ হইতে বঞ্চিত হইতে হয়। আমাদের সুখ যখন এমত বিভিন্ন প্রকার, তখন ইহা স্পষ্টই রহিয়াছে, যে এসমুদায় সুখ এক কালে উপভোগ করা আমাদের সাধ্য হয় না। ইন্দ্রিয় লোলুপ ব্যক্তি বুদ্ধি জনিত ও ধর্ম্ম-জনিত সুখভোগে সমর্থ হয় না। ধার্মিক ব্যক্তির অনেক সময় বিষয় সুখে বঞ্চিত হইতে হয়। আমাদের হৃদয়ে কোন দুঃসহ পরিতাপ উপস্থিত হইলে ইন্দ্রিয়-সুখ বিজ্ঞানসুখ ইহার কিছুই আস্বাদন করিতে পারি না এবং ইহাও দেখা গিয়াছে যে ধর্ম্ম-যোদ্ধাগণ ধর্ম্ম-বর্ম্মে আবৃত থাকিয়া বিপক্ষদিগের সহস্র প্রকার অত্যাচারকে তুচ্ছ করিয়াছে। তাহাদের আত্মার শান্তি কেহই হরণ করিতে পারে নাই। “প্রসাদে সর্ব্বদুঃখানাং হানিরস্যোপজায়তে।” ইহা হইতে আমরা এক নিয়ম এই পাইতেছি, যে যহৎ এবং পবিত্র সুখ উপভোগ করিতে হইলে নিকৃষ্ট সুখকে অনেক সময় পরিত্যাগ করিতে হইবে। বিষয়ের সঙ্গে যেমন আমাদের বিষয়-সুখ, ধর্ম্মের সঙ্গে সেই রূপ আত্ম-প্রসাদ এবং ঈশ্বরের সঙ্গে ব্রহ্মানন্দের উপভোগ হয়। এই ধর্ম্ম-জনিত আত্ম-প্রসাদ এবং ঈশ্বরের সহবাস জনিত ব্রহ্মানন্দ আমাদের চিরজীবনের সম্বল। বিষয়ের যোগে যে সুখ, তাহা বিষয়ের বিচ্ছেদেই চলিয়া যাইবে; কিন্তু ধর্মের আনন্দ ও