পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৷৵৹

সহস্র প্রখর বুদ্ধি একত্র হইয়া বহুতর যুক্তি প্রদর্শন পূর্ব্বক জগতের অস্তিত্ব খণ্ডন করিয়াছে; তথাপি কোন্ উন্মাদ এমন আছে, যে বাহ্য বস্তুর অস্তিত্বের প্রতি সংশয় করে। বিপক্ষের শত সহস্র যুক্তি ও তর্ক এ স্থলে পরাভব পায়। ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণও সেই রূপ তর্ক তরঙ্গের উপর নির্ভর করে না। আমি যখন তাঁহাকে জ্ঞান-নেত্রে প্রত্যক্ষ প্রতীতি করি; তখন আর আমি ছায়া দেখি না, তখন করতল-ন্যস্ত আমলকের ন্যায় তাঁহার সত্তা স্পষ্ট রূপে উপলব্ধি করি—তখন “ভিদ্যতে হৃদয় গ্রন্থি শ্চিদ্যন্তে সর্ব্বসংশয়ঃ” হৃদয়ের গ্রন্থি ভিদ্যমান হয়, সকল সংশয় নিরাকৃত হয়। এই স্বাভাবিক সহজ-জ্ঞান ব্যতীত কোন সত্যই আমাদের প্রত্যক্ষ গোচর হয় না। কোন প্রকার ব্যাখ্যাতে কেহ জন্মান্ধকে বর্ণ বুঝাইয়া দিতে পারে না— কোন বর্ণনাতেই আমরা মিষ্ট, কি কটু, কি কোন প্রকার আস্বাদন উপলব্ধি করিতে পারি না। মহত্তর উচ্চতর আধ্যাত্মিক বিষয়-সকলও আমাদের পক্ষে এই রূপ।

 এই সহজ-জ্ঞান আর বুদ্ধি, এ দুয়ের স্বরূপ বিস্তর ভিন্ন। সহজ-জ্ঞানে আমরা বিষয় পাই, বুদ্ধি সেই সকল বিষয়, লইয়া নির্ম্মাণ করে। বিস্তৃতি আর সংখ্যার জ্ঞান আমরা সহজে উপলব্ধি করি, বুদ্ধি তাহা লইয়া গণিত শাস্ত্র নির্ম্মাণ করে; কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য জ্ঞান সহজে লাভ করি, বুদ্ধি তাহার উপরে নীতি-শাস্ত্র নির্ম্মণ করে। ঈশ্বর, পরকাল, সহজ-জ্ঞানে গ্রহণ করি, বুদ্ধি তাহাতে ধর্ম্ম-শাস্ত্র রচনা করে। এই সকল বিষয় না পাইলে বুদ্ধি কিসের উপর