পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
অষ্টম উপদেশ।

প্রত্যাশায়ও সেই প্রকার। এক দিবস কারাবাসের ভয়ে পাপ হইতে নিবৃত্ত হওয়াও যাহা,চতুর্দ্দশ বৎসর নির্ব্বাসের ভয়ে বিরত হওয়াও সেই প্রকার; এবং অনন্ত নরকাগ্নি ভয়েও সেই প্রকার। যে ব্যক্তি প্রত্যাশাপন্ন হইয়া ধর্ম্ম সাধন করে, সে একেবারেই বহু সম্পত্তি পাইবার মানসে আপাততঃ কিঞ্চিৎ কষ্ট সহ্য করিতে পারে; কিন্তু যিনি ধর্ম্মের জন্যই ধর্ম্ম সাধন করেন, তিনি আর মূল্যের বিষয় বিবেচনা করেন না; তাঁহার পক্ষে অল্প মূল্যও যাহা, আধিক মূল্যও সেই প্রকার।

 কিন্তু স্বর্গের লোভে যেমন ধর্ম্ম হয় না, নরকের ভয় পাপীর পক্ষে কি রূপ? পাপীকে নরকের ভয় কি দেখাইবে? সে এখানে নরকের জ্বালা সহ্য করিতেছে; অথচ তাহাতে তাহার চেতন হয় না। পাপীকে অনন্ত নরক, জ্বলন্ত অনল, দুঃসহ যাতনার ভয় দেখাও, তাহাতে তাহার কি হইবে? তাহার পাপের আসক্তি কি ক্ষীণ হইবে? না, কেবল ভয়েরই সঞ্চার হইবে। ভয়েতে চালিত হওয়া অপেক্ষা আর নীচ ভাব কিছুই নাই। যে ব্যক্তি পাপের মলিনত্ব দেখিতে পাইয়াছে, তাহা হইতে বিরত হইবার ক্ষমতা বুঝিয়াছে, ঈশ্বরের অপ্রসন্নতা অনুভব করিয়াছে; অথচ যাহার পাপের প্রতি কিছু মাত্র ঘৃণা উপস্থিত হয় নাই, ঈশ্বর-প্রীতির শাখা মাত্রও যাহার হৃদয়ে উদ্দীপ্ত হয় নাই কিন্তু সে ব্যক্তি নীচ হীন পশুবৎ ভয়েতেই কখন কখন পাপ প্রবৃত্তিকে চরিতার্থ করিতে পারে নাই; তাহার অপরাধের কি তাহাতে কিছু মাত্র লাঘব হইল? মন্দকে