পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
নবম উপদেশ।

কর্ত্তব্য তাহা অবধারণ করা কেমন কঠিন। এই সকল স্থলে কি কর্ত্তব্য? শত শত গ্রন্থ মধ্যে শত শত লোকের নিকট হইতে আমরা যে উপদেশ পাই না, এক বার ঈশ্বরের প্রতি দৃষ্টি করিয়া সেই সকল বিষয় আলোকের ন্যায় স্পষ্ট দেখিতে পাই, সেই পরম গুরু হইতে শিক্ষা লাভ করি। মুক্তির প্রতি লক্ষ্য থাকিলে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সকল কর্ম্মেই যোগ থাকে। অন্যেরা যেখানে রাশি রাশি কর্ত্তব্য ভাবে আচ্ছন্ন হইয়া পড়ে, আমাদের নিকটে সে সকল কর্ত্তব্য একীভাব ধারণ করে। অন্যেরা যে স্থলে কর্ত্তব্য কি ভাবিয়াই স্থির করিতে পারে না, সেই সকল স্থানে ঈশ্বরের প্রতি দৃষ্টি করিয়া আমরা যথা উপদেশ প্রাপ্ত হই। অন্যেরা যেখানে একাকী আপন ক্ষুদ্র বলে পাপের সহিত সংগ্রাম করিতে প্রবৃত্ত হয়, সেখানে আমরা ঈশ্বরকেই সহায় পাই—তাঁহার নিকটে আপনাকে সমর্পণ করিয়া চতুর্গুণ বল প্রাপ্ত হই। অন্যেরা যখন একবার পতিত হইয়া নিরাশ-নীরে পতিত হয়, ঈশ্বর স্বীয় ক্রোড় বিস্তার করিয়া দিলেও তাঁহাকে আশ্রয় করতে যায় না; আমরা সে সময়ে সেই পতিত-পাবনের শরণাপন্ন হইয়া আবার উদ্ধার হই। যাহাতে আমরা সকল বিঘ্ন অতিক্রম করিয়া পুনর্ব্বার তাঁহার নিকটে যাইতে পারি, তিনি এই প্রকার শুভ বুদ্ধি প্রেরণ করেন, বলবীর্য্য প্রদান করেন।

 মুক্তি কি? না সংসার বন্ধন হইতে মুক্ত হওয়া। মৃত্যুর পাশ হইতে প্রমুক্ত হইয়া অমৃতের দিকে অগ্রসর হওয়া। বিষয়াকর্ষণ হইতে বিমুক্ত হইয়া বিষয়ের অতীত পদার্থকে