পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি।
৭৯

আশ্রয় করা। যত কাল আমরা সংসার বন্ধনেই বদ্ধ থাকি, তত দিন আমাদের বদ্ধ ভাব। যত দিন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত থাকি, তত দিন মৃতুর পাশেই বদ্ধ হইয়া থাকি। আমরা অন্তরে মুক্ত না হইলে মুক্তির ভাব বুঝিতে পারি না। আমরা এখানে মৃত্যু আর অমৃতের সন্ধিস্থলে রহিয়াছি। মৃত্যু হইতে অমৃতের দিকে যত যাইতে থাকি, ততই আমাদের মুক্তভাব উপলব্ধি হইতে থাকে। আমাদের জ্ঞান ও ভাব ও ইচ্ছা সকলকেই একত্র করিয়া ঈশ্বরেতে যতই সমর্পণ করিতে পারিব, ততই আমরা মুক্তির অবস্থা প্রাপ্ত হইতে থাকিব। যখন ঈশ্বরের সঙ্গে আর আমাদের বিবাদ থাকিবে না, তখনই আমাদের যথার্থ মোক্ষাবস্থা হইবে।

 ঈশ্বরের সঙ্গে বিবাদ কি? দ্যুলোক, ভূলোক, চন্দ্র, সূর্য্য, পৃথিবী, সকলই যাঁহার এক রাজ-দণ্ডের উপর চলিতেছে, তাঁহার সহিত বিবাদ কে করিতে পারে? কেবল মনুষ্যই কর্ত্তৃত্ব ভার প্রাপ্ত হইয়া অকৃতজ্ঞ ও অসৎ পুত্রের ন্যায় তাঁহার আদিষ্ট ধর্ম্ম-পথের বিপরীত দিকে চলিতে যায় ও শাস্তি ভোগ করে। আমাদের ইচ্ছা কখনো তাঁহার মঙ্গলময়ী ইচ্ছার অনুগামিনী হয়, কখনো বা বিরোধিনী হয়। তাঁহার সহিত কখনো আমাদের সন্ধি থাকে, কখনো বিবাদ থাকে। এই স্বাধীনতা শক্তি মনুষ্যের প্রতি ঈশ্বরের এক অমূল্য দান। মনুষ্যকে এই অধিকার দিয়া তিনি তাহাকে বলিয়া দিয়াছেন, যে তুমি আপনা হইতে আমার পথে আইস। সকলেই সেই সর্ব্বনিয়ন্তার কার্য্য করিতেছে কিন্তু মনুষ্য কেবল জানিয়া শুনিয়া তাঁহার কার্য্য সম্পন্ন