পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
নবম উপদেশ।

করিতেছে। সমস্ত জগৎ, সমস্ত ঘটনা, তাঁহার মঙ্গল অভিপ্রায় সিদ্ধ করিতেছে; কিন্তু আমরা আপন ইচ্ছাতে সেই অভিপ্রায়ে যোগ দিতেছি। আমরা আপনা হইতে তাঁহাকে সর্ব্বস্ব দান করি, আমারদিগকে স্বাধীন করিবার তাঁহার অভিপ্রায় এই। এস্থলে অনুরোধ, ভয়, বাধ্যতা, এ সকল কিছুই নাই। আমরা আপনা হইতে তাঁহাকে প্রীতি করি, তিনি এই চাহেন। তাঁহার ইচ্ছা এ প্রকার নয় যে আমরা বাধ্য হইয়া তাঁহাকে পূজা করি। তাঁহার শাসন এ প্রকার নয় যে ভয়ে ভয়ে তাঁহাকে মান্য করিতেই হইবে। তিনি এ প্রকার রাজা নহেন, যে আমরা সকলেই তাঁহার ক্রীত দাস। আমরা বিনা অনুরোধে বিনা ভয়ে তাঁহার প্রীতি, তাঁহার মঙ্গলভাব, প্রতীতি করিয়া আপনা হইতে তাঁহাকে যে পূজা অর্পণ করি, সেই তাঁহার যথার্থ পূজা এবং সেই তাঁহার প্রিয় অভিপ্রায়। আমরা তাঁহার যন্ত্র আর তিনি আমাদের যন্ত্রী, আমাদের সহিত তাঁহার এ প্রকার ভাব নহে।

 এই প্রকার স্বাধীন করিয়া দিয়াই তিনি আমাদিগকে মুক্তি লাভের অধিকারী করিয়াছেন। তিনি যদি আমাদিগাকে এ প্রকার করিয়া দিতেন যে যন্ত্রের ন্যায় তাঁহার কার্য্য করিয়াই যাইব, তাহা হইলে আমরা মুক্তির কোন অর্থই পাইতাম না। তিনি আমাদের সকল শক্তির নেতা রূপে আমাদিগকে একটি কর্ত্তৃত্ব শক্তি দিয়াছেন। এই কর্ত্তৃত্ব শক্তি হইতেই আমরা মুক্তির ভাব বিশেষ বুঝিতেছি। আমরা তাঁহাকে আশ্রয় করিয়া মুক্তি লাভ করিব, তাঁহার