বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭
ভবিষ্যতের বাঙালী

ভারতবর্ষকে এক অখণ্ড মহারাষ্ট্ররূপেই দেখতে এবং ভাবতে হ’বে। এক্ষেত্রে এ কথাও ভুললে চলবে না যে, উত্তর-পশ্চিম ভারতের যুদ্ধকুশল জাতিগুলিকে যদি দেশের প্রহরীরূপে গ্রহণ করা না হয়, তা’ হ’লে বাহুবলের প্রভাবে তারা শেষে দেশের মালিকের স্থান অধিকার করবে।

 তবে মানুষ যন্ত্র নয়। তার রাষ্ট্র জীবনের আলোচনায় কেবল দুর্ভেদ্য সীমান্ত আর তার যুদ্ধকুশলতার কথা ভাবলেই চলবে না। এই যে সীমান্ত-প্রহরীর কথা ভাবতে হয়, এ থেকেই বোঝা যায় যে, লোভ, লালসা, দ্বেষ, হিংসা, রাগ, বিরাগ প্রভৃতি বিভিন্ন রিপুর তাড়নাতেই মানুষের জীবন পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত হয়। তা’ছাড়া সামরিক বিশেষজ্ঞেরা যাই বলুন, রাষ্ট্রের সবচেয়ে মজবুত আত্মরক্ষার উপায় হ’ল রাষ্ট্রবাসীদের অন্তরের স্নেহ, প্রীতি এবং ভালবাসা। সাধারণ রাজনীতিকেরা এই মহাসত্যকে উপেক্ষা করেন বলেই রাষ্ট্রে অন্তর্বিপ্লব এসে দেখা দেয়, আর তার ফলে আত্মরক্ষার বিধি-ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, পরীক্ষার বেলায় রাষ্ট্র ভেঙ্গে খণ্ড খণ্ড হ’য়ে যায়।

 সর্ব্বদেশের সর্ব্বমানব মিলে পরস্পরের প্রেম আৰু ভালবাসার ভিত্তিতে যদি এই পৃথিবীতে এক অখণ্ড রাষ্ট্র স্থাপন করতে পারত, তা’ হ’লে সেই হ’ত আমাদের আদর্শ রাজনীতিক প্রতিষ্ঠান! সে রাষ্ট্রে দ্বেষ-হিংসা, দ্বন্দ্ব-কলহ, যুদ্ধ-বিগ্রহ প্রভৃতি অপ্রীতিকর জিনিষ কিছুতেই থাকত না। পরস্পরের মঙ্গল সাধনের জন্য, পরস্পরকে সাহায্যদানের জন্য সকলেই উদগ্রীব থাকত; মানুষের সেবা করতে পারলে, মানুষ নিজেকে ধন্য মনে করত; বিশ্বময় বিরাজ করত সুখ আর শান্তি, প্রেম আর প্রীতি, সেবা আর কৃতজ্ঞতা। এই পৃথিবী তাহ’লে স্বৰ্গ হ’য়ে যেত। কিন্তু তা’ হয়নি! হ’বার কোন সম্ভাবনাও আপাততঃ দেখা যাচ্ছে না! এর কারণ কি?