পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ଈର ভবিষ্যতের বাঙালী "বটে ! এত উৎসব, এত আনন্দ অথচ আমার কথা কেউ মনে করলে না ! আমার নিমন্ত্রণ হ’ল না । বেশ ! ভাল ক’রে আজ তোমাদের আমি শিক্ষা দিচ্ছি ; আর সব পরীরা দিচ্ছেন বর, আমি দেব অভিশাপ । রূপে, গুণে রাজকুমারী অতুলনীয়া হবেন, একথা সত্য ; কিন্তু আমি অভিশাপ দিচ্ছি, যেদিন রাজকুমারী যৌবনে পদাৰ্পণ করবেন, সেই দিনই র্তার মৃত্যু হ’বে।” অভিশাপ দিয়ে ক্রুদ্ধ কাল পরী অদৃশ্য হলেন। রাজপুরীতে ক্ৰন্দনের রোল উঠল। সব উৎসব, সব আনন্দ মুহূৰ্ত্তের মধ্যে থেমে গেল, একটী নিমন্ত্রিত পরী কিন্তু তখনও বর দেওয়া শেষ করেন নি। তিনি সকলকে সম্বোধন ক’রে সান্তনার কণ্ঠে বললেন, “কুদ্ধ কাল পরীর অভিশাপ ব্যৰ্থ করবার ক্ষমতা আমার নাই। তবে তা” সত্ত্বেও রাজকুমারীকে জিইয়ে রাখতে আমি পারব। আমার বরে রাজকুমারী একেবারে মরবেন না, তবে একশত বৎসর জীবন্ম তা হয়ে থাকবেন, অঘোরে ঘুমিয়ে থাকবেন। একশত বৎসর অতিবাহিত হ’ল পর, কোন ভাগ্যবান এক রাজকুমারের সোনার কাঠির স্পর্শে তিনি জেগে৷ উঠবেন । আর তারপর পরম সুখে তঁর জীবন কাটবে।” পরীর কথামত যৌবনে পদার্পণ করেই রাজকুমারী ঘূমিয়ে পড়লেন। আর সঙ্গে সঙ্গে রাজা-রাণী, দাস-দাসী, নফর-চাকর, হাতী-ঘোড়া, কুকুর-বিড়াল, এক কথায় রাজপুরীর যে যেখানে ছিল সকলেই ঘুমিয়ে পড়ল। দাসী বাসন মাজতে মাজতে ঘুমিয়ে পড়ল, ছোকরা চাকরিটা কুকুর তাড়াতে তাড়াতে ঘুমিয়ে পড়ল, বিড়াল ইদুরের পেছনে দৌড়তে দৌড়তে ঘুমিয়ে পড়ল, ইদুর পালাতে পালাতে ঘুমিয়ে পড়ল। বিশাল রাজপুৱী মুহূৰ্ত্তের মধ্যে প্রাণহীন জড়ের মতই নিস্তব্ধ হ’য়ে গেল। বৎসরের পর বৎসর, যুগের পর যুগ কেটে যেতে লাগল। রাজপুরী জঙ্গলে ঢাকা পড়ল। তার স্মৃতি পয্যন্ত মানুষের মন থেকে বিলুপ্ত হ’ল।