ভবিষ্যতের বাঙালী - Σ. Σ' ο এক নূতন অধ্যায়ের সূত্রপাত হ’বে। ভারতবর্ষে, বিশেষ ক’রে বাংলায় যুগে যুগে বিচিত্ৰ ভাবের বন্যা এসেছে, বহু জাতির সংমিশ্রণ হয়েছে। তাদের পারস্পরিক মেল-মিশায় এবং শিক্ষা, সভ্যতা ও মতের আদানপ্রদানে এখানকার মহাভাবের গঙ্গোত্রীধারা পুষ্টই হয়েছে। ইতিহাস সে সাক্ষ্য দেবে।’ পৃথিবীর ক্ষুদ্র সংস্করণ আমাদের এই সুবর্ণপ্ৰসূ ভারতভূমি সত্যই মহামানবের তীর্থভূমি। এই মহামিলনের পটভূমি যে বাংলাদেশে রচিত হ’চ্ছে, এ আমি অন্তরীচক্ষে যেন দেখতে পাছি ; আর লক্ষ্য করছি সেই অনাগত কালোপযোগী যুগমানবের আবির্ভাব। সে যুগমানব কবে আবিভূতি হবেন, বলতে পারি না। তবে তিনি কি ভাবের মানুষ হবেন, সে বিষয়ে আমার মনে যে ধারণা আছে, তাই এখানে উপস্থিত করছি । W সেই অনাগত মহামানব একান্তভাবে সত্যনিষ্ঠ, সত্যভাষী এবং সত্যাশী হবেন। মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, ভণ্ডামি প্রভৃতি তিনি অন্তরের সঙ্গে ঘূণা করবেন। দুঃখীর দুঃখে, শোকাতুরের শোকে, ব্যথিতের ক্ৰন্দনে অন্তর তার বিগলিত হ’বে । ন্যায় এবং সুবিচারের প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তরে তার সর্বদাই তুমুল এক হিল্লোল চলবে। অন্যায়ু এবং অত্যাচার মোটেই তিনি সহ্য করতে পারবেন না । জাতীয়তার তিনি মূৰ্ত্ত প্ৰতীক হবেন, জাতীয়তার বাণী সর্বদাই তার মুখে শোনা যাবে। একান্তভাবে ন্যায়নিষ্ঠ এবং ধৰ্ম্মপ্ৰাণ হ’লেও, ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ নিয়ে তিনি বেশী ঘাটাঘাটি করবেন না ; কেননা, তিনি হবেন বিশিষ্ট ধৰ্ম্মনিরপেক্ষ । মহান এক আদর্শের মূৰ্ত্তি প্রতীক-ধৰ্ম্মের বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গী হবে সম্রাট আকবরেরই মত। আকবরের মতই তিনিও বলবেন : “তোমার যারা প্রিয়, তারা সনাতনপন্থীও নয়। আর নব্যপন্থীও নয় ! উভয় দলই সত্যের অনাবৃত রূপ থেকে দূরে পড়ে আছে!
পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/১১৩
অবয়ব