আর ভারত-রক্ষার জন্য এবং বৈদেশিক শক্তির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, যুদ্ধবিগ্রহ প্রভৃতি চালনার জন্য একটী কেন্দ্রীয়, শাসনতন্ত্রের সৃষ্টি করা দরকার। এই পথে গেলেই আমরা ভারতবর্ষে স্থায়ী এবং বর্ত্তমান জীবনের প্রয়োজনের উপযোগী রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রবর্তন করতে পারব। ভারতের রাষ্ট্রীয় জীবনের গতি প্রকৃতি ও ধারাবাহিক ক্রমবিকাশ আমাদের সেই নির্দেশই দিয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক কারণে ভারতবর্ষ যে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট খণ্ডে বিভক্ত হ’য়ে গেছে, তার মধ্যে আমাদের বাংলা দেশ অন্যতম। বাংলা দেশের কি কি বিশেষত্ব আছে, যে—জন্য ভারতের অন্যান্য দেশ থেকে সে স্বতন্ত্র এক আকার ধারণ করেছে, এখন তারই আলোচনা করা যাক।
প্রথম যে বৈশিষ্ট্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে— সেটি হ’চ্ছে ভাষাগত ঐক্য। এই বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডে জাতি-ধর্ম্ম-নির্বিশেষে সকলে একই ভাষা ব্যবহার করে; আর সেটি হ’চ্ছে বাংলা ভাষা। দ্বিতীয়তঃ এদেশের বিভিন্ন ধর্ম্মের লোকের মধ্যে মোটামুটি ভাবে এমন একটা কুলগত ঐক্য আছে, যে জন্য কে কোন ধর্ম্মের লোক, সহজে তা' চেনা যায় না; পক্ষান্তরে যে-কোন বাঙালীকে যে-কোন অবাঙালী থেকে সহজেই পৃথক ক’রে লওয়া যায়। দ্রাবিড়, আর্য, মোঙ্গল, সেমিটীকা প্রভৃতি বিভিন্ন জাতির শত শত বৎসরের সংমিশ্রণের ফলে অভিনব অথচ সুনিদিষ্ট এক জাতির উদ্ভব হয়েছে, যাকে আধুনিক বাঙালী জাতি বলা যেতে পারে। আর সেই বাঙালী জাতির এমন কতকগুলি সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে যে-জন্য ভারতের অন্যান্য প্রদেশের লোক থেকে সহজেই তাদের পৃথক ক’রে নেওয়া যেতে পারে। যথা—বাঙালী শান্তিপ্রিয়; যুদ্ধবিগ্রহ, মারামারি, কাটাকাটি সে ভালবাসে না। বাঙালী বুদ্ধিমান, ভাবপ্রবণ—সঙ্গীত, সাহিত্য, কলাবিদ্যা প্রভৃতিকে