বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী ܘ ܢ সাধারণতঃ মুসলমান। অথচ আরব-জাতীয়তার গোড়াপত্তন করেছেন আধুনিক প্রথায় শিক্ষিত দু’জন খৃষ্টান মনীষী-নাজীফ এজীব্দী এবং বেতেরাস বোস্তানী । ভিন্ন-ধৰ্ম্মাবলম্বী দেশবাসীদের মধ্যে এই দুষ্ট মনস্বী জাতীয়তার আদর্শপ্রতিষ্ঠার জন্য যে পন্থা অবলম্বন করেছিলেন, তা” প্ৰত্যেক দেশের দেশপ্রেমিকের অনুকরণীয় । ১৮৬০ খৃষ্টাব্দে আরব জাতি যখন নৃশংসভাবে খৃষ্টান হত্যায় উন্মত্ত হ’য়ে উঠল, তখন সে হিংসা নল-নিৰ্বাপনের উদ্দেশ্যে ধোস্তানি বাইকটে” এসে একখানি সংবাদপত্র প্রকাশ করলেন । খৃষ্টানদের প্রতি আরব-জাতির সম্প্রীতি-সাধন করতে গিয়ে বোস্তানি উপলব্ধি করলেন, মূঢ়তা ঘুচাতে না পারলে মানুষের গ্ৰেীড়ামি ঘুচিবে না, এবং গােঁড়ামি না। ঘুচালে মানুষের মন দ্বেষ-হিংসার কন্টকে পরিপূর্ণ থাকবেই। আরবে: তিনি শিক্ষা-প্ৰসারের ব্যবস্থা করলেন । সে শিক্ষা-নিকেতন হ’ল জাতীয় বিদ্যালয় । আরব-প্ৰেমকে কেন্দ্ৰ ক’রে, ধৰ্ম্ম-বিদ্বেষ ত্যাগ ক’রে এখানে শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা হ’ল। এ বিদ্যালয়ে আরবী শিক্ষকতার জন্য বোস্তানি পেলেন না জীফ এজীব্দীকে । নিঃস্বর্থ-প্ৰেমিক বোস্তানির আদর্শে এজীব্দী শ্ৰদ্ধান্বিত হলেন, এবং উভয়ের বিপুল সাধনায় আরব জাতি ক্ষুদ্রতা ভুলে, হিংসা-দ্বেষ ভুলে সৰ্ব্ব ধৰ্ম্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখল-আরবে: আবার নূতন আরবের অত্যুত্থান হ’ল। নবীন আরবী অথবা নব্য তুর্কীর মত প্রকৃতির লীলা-নিকেতন এই সৌভাগ্য-সম্পদশালিনী বাংলা দেশে, এই বাঙালীর জীবনেই বা অখণ্ড এক আদর্শ জাতীয়তা সম্ভব হ’বে না কেন ? এ সম্ভাব্যের প্রচুর উপকরণ বাঙালীর প্রকৃতিতে এবং বাংলার আকাশে-বাতাসে, নদীনালায়, পথে-প্ৰাস্তরে ও শ্যামলিমায় বর্তমান । শুভবুদ্ধি নিয়ে বাঙালী শুধু নিঃস্বাৰ্থ নয়ন মেলে দেখলেই হয়।