বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী 8& জয়গান করতে আমরা বড় একটা কুণ্ঠা দেখাই না। ব্যক্তিগত স্বার্থে আঘাত না লাগলে, অন্যায়ের প্রতিবাদে আমাদের দেশের লোক বিশেষ আগ্রহ দেখায় না। কথার পটুতা কাজের পটুতার চেয়ে এদেশে অনেক বেশী। বড় বড় কথা বলার অভ্যাস আমাদের আছে, কিন্তু কথার সঙ্গে কাজের সামঞ্জস্য রাখার প্রয়োজন আমরা অনুভব করি না । আমাদের দেশের লোকের সঙ্গে স্বাধীন উন্নতিশীল কোন দেশের জনসাধারণের তুলনা করলেই আমাদের জাতীয় চরিত্রগত দুর্বলতা সহজে ধরা পড়ে। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবার দরকার হয় না । • জাতির মঙ্গলের জন্য, রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের জন্য চরিত্র যে কত প্রয়োজনীয়, একটা দৃষ্টান্ত দিলে সহজেই তা’ বোধগম্য হ’বে। ধরা যাক, আত্মরক্ষার জন্য একটা জাতিকে ক্ষমতাশালী অপর এক জাতির সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হ’তে হ’ল। সাফল্যের সঙ্গে যদি সেই যুদ্ধ চালাতে হয় তা’ হ’লে কি কি জিনিষের দরকার হ’বে ? প্রথমতঃ দরকার, রাষ্ট্রবাসীদের মধ্যে সাহসের, বিপদকে, তুচ্ছ ক’রে দেখবার ক্ষমতার। কাপুরুষ যুদ্ধে জয়ী হ’তে পারে না। সাহস হ’চ্ছে বড় নৈতিক গুণ । তারপর দেশের জন্য, দশের জন্য আত্মোৎসর্গের প্রেরণা এবং ক্ষমতা থাকা চাই । দেশের এবং দশের মঙ্গলের চেয়ে যে নিজের জীবনকে মূল্যবান ব’লে মনে করে, সে যুদ্ধে কৃতিত্ব দেখাতে পারে না ; দেশের সম্মিলিত শক্তি র্যারা পরিচালিত করবেন, তাদের মধ্যে যদি কৰ্ত্তব্যজ্ঞান *এবং ন্যায়নিষ্ঠা না থাকে, তা”হ’লে সবষ্ট পণ্ড হ’য়ে যাবে। জনসাধারণের মনে যদি এ ধারণা জন্মে যে, দেশের নেতারা যুদ্ধকে উপলক্ষ ক’রে নিজ নিজ ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টায় ব্যস্ত আছেন, তা”হ’লে দেশরক্ষার ব্যাপারে তাদের সব উৎসাহ, সব উদ্দীপনা নিভে যাবে ; যুদ্ধের জন্য স্বাৰ্থ এবং জীবনবিসৰ্জন করবার মত মনের অবস্থা তাদের আর থাকবে না ।