বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী א 令g কোন তরিকার গুপ্ত রহস্য জানতে হ’লে, সে তরিকার পীরের কাছে শিয়ুত্ব গ্ৰহণ করতে হয়। আমি কখনও কোন পীরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিনি, সুতরাং সে রহস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ পরিচয়ের দাবী আমি করতে পারি না। তবে ভাবসম্পদের দিক থেকে সুফিরা যে দান বিশ্ববাসীকে, বিশেষতঃ মুসলিম জাতিকে দিয়ে গেছেন, সেটা সত্যই জাতি-ধৰ্ম্মনির্বিবশেষে সকলেরই শ্ৰদ্ধার বস্তু । সুফি-ভাবধারা ইরাণে সবিশেষ বিস্তার লাভ করেছিল ; যে ফাসি কাব্য-সাহিত্য বিশ্বসভ্যতার অন্যতম গৌরবের বস্তু, তার জীবনধারা এই সুফি আদর্শ থেকেই প্রবাহিত হয়েছিল। শামস তবরোজ, রূমী, সাদী, হাফেজ, জামী প্ৰভৃতি মহাকবিরা সকলেই সুফি পন্থী ছিলেন। ওমার খৈয়ামের কবিতাও সুফিভাবমূলক, তবে তিনি সুফি ছিলেন বলে মনে হয় না। মধ্যযুগের দরবেশ, আওলিয়। প্রভৃতি সকলেই সুফি-মতবাদী ছিলেন । মুসলিম সাম্রাজ্যপ্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই সুফিবাদ ভারতবর্ষে এসে দেখা দেয়, এবং ভারতীয়, বিশেষত: ভারতীয় মুসলিম জীবনকে বিশেষভাবে প্রভাবান্বিত করে । খাজা মইনুদিন চিশতী, নিজাম উদ্দীন আউলিয়া, শাহ সুফি-সুলতান, শাহ জালাল প্রভৃতি বিখ্যাত তাপসেরা সকলেই সুফিমতাবলম্বী ছিলেন। আমীর খসরু, উরুকী, ফায়জী, আবুল ফজল, কবীর, সারমুদ প্রভৃতি কবির সুফি-আদৰ্শই প্রচার ক’রে গিয়েছেন। সম্রাটু অশোকের সময়ে বৌদ্ধধৰ্ম্ম যেমন রাষ্ট্রায় আসনে প্ৰতিষ্ঠিত হয়, খলিফা আলমামুনের সময়ে মোতা জেলবাদ যেমন রাজকীয় সম্মান লাভ করে, মহামতি সম্রাটু আকবরের সময়ে সুফিবাদ তেমনি । সাম্রাজ্যের স্বর্ণসিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত হয়। আকবর আজীবন সুফিমতবাদী ছিলেন এবং পরিণত বয়সে পীর বা ধৰ্ম্মগুরুরূপে নিজেকে প্রচার করেন।