পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
১০৫

ভাগ জল এক ভাগ স্থল, কিন্তু বন্যার ব্রহ্মপুত্রের ঘোলা স্রোতে সেদিন তিনভাগ স্থল একভাগ জল। তাতে দেহ স্নিগ্ধ হ’লো বটে কিন্তু নির্ম্মল হ’লো ব’ল্‌তে পারিনে। বোলপুর থেকে রাত্রি এগারোটার সময় হাওড়ার তীরে কাদার মধ্যে প’ড়ে যেমন গঙ্গাস্নান হ’য়েছিলো, সেদিন ব্রহ্মপুত্রের জলে স্নানটাও তেম্‌নি পঙ্কিল। তা হোক্, এবার আমার ভাগ্য আমাকে ঘাড়ে ধ’রে পুণ্যতীর্থোদকে স্নান করিয়ে দিলেন। কোথায় রাত্রি যাপন ক’র্‌তে হবে তারি সন্ধানে আমাদের মোটারে চ’ড়ে গৌহাটি সহরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়া গেল। কিছু দূরে গিয়ে দেখি, আমাদের গাড়িটা হঠাৎ ন যযৌ ন তস্থো। বোঝা গেল, আমাদের ভাগ্যদেবতা বিনা অনুমতিতে আমাদের এ গাড়িতেও চ’ড়ে ব’সেচেন, তিনিই আমাদের কলের প্রতি কটাক্ষপাত ক’র্‌তেই সে বিকল হ’য়েচে। অনেক যত্নে যখন তাকে একটা মোটরগাড়ির কারখানায় নিয়ে যাওয়া গেল তখন সূর্য্যদেব অস্তমিত। কারখানার লোকেরা ব’ল্‌লে, “আজ কিছু করা অসম্ভব, কাল চেষ্টা দেখা যাবে।” আমরা জিজ্ঞাসা ক’র্‌লুম, “রাত্রে আশ্রয় পাই কোথায়?” তারা ব’ল্‌লে, “ডাকবাংলায়।”